Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিদেশি ব্যাংকে কালো টাকা: বাংলাদেশের স্থান ৫১তম

Black-Moneyগত এক দশকে (২০০৩-২০১২) বাংলাদেশের মোট কালো টাকার পরিমাণ ১ হাজার ৩১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৫১ তম। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি’ সংস্থার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সোমবার সংস্থাটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। উন্নয়নশীল ও উন্নত ১৫১টি দেশের ওপর গবেষণা চালিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

chardike-ad

প্রতিবেদনে জানানো হয়, তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে চীন, রাশিয়া ও মেক্সিকো। এছাড়া চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। এর পরেই রয়েছে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড।

সংস্থাটি জানায়, গত এক দশকে চীনের মোট কালো টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া রাশিয়া, মেক্সিকো ও ভারতের রয়েছে যথাক্রমে ৯৭ হাজার ৩৮৬ মিলিয়ন, ৫১ হাজার ৪২৬ মিলিয়ন ও ৪৩ হাজার ৯৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, এর মধ্যে শুধু ২০১২ সালেই বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হয়েছে ভারতের ৯৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে চীন ও রাশিয়ার জমা পড়েছে ২৪৯ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ১২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রসঙ্গত, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক-এসএনবির ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৩’শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এরপর গত জুন মাসে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থ প্রকৃতপক্ষে দেশ থেকে পাচার হওয়া কিনা- সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসাথে গচ্ছিত ওইসব অর্থের প্রকৃত মালিককে সনাক্ত করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সাল শেষে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের অন্তত ৩৭ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ গচ্ছিত রয়েছে, যা প্রায় ৪১ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা তিন হাজার ১৬২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার সমান।

এই অর্থ ২০১২ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের চেয়ে ৬২ শতাংশ বেশি। ওইবছর সুইস ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অন্তত ২২ কোটি ৮৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ জমা ছিল, যা প্রায় ২৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা এক হাজার ৯০৮ কোটি টাকার সমান।

সম্প্রতি বিদেশের ব্যাংকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

এইচএসবিসি-র জেনিভা ব্রাঞ্চে ভারতীয়দের জমা করা প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তারা তদন্ত করছে।

পাশাপাশি দেশের মধ্যেও প্রায় ১৫ হাজার কোটির মতো কালো টাকার হদিস পেতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ও আয়কর দফতর পৃথক তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছে সিট।

কয়েকদিন আগে, এক চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হার্ভ ফ্যালসিয়ানি নামের এইচএসবিসি জেনিভা দফতরের এক প্রাক্তন কর্মী জানিয়েছিলন, কালো টাকা নিয়ে ভারতের হাতে ১ শতাংশ খবরও নেই। তবে তিনি ভারতকে এই মামলায় পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, হার্ভই সেই ব্যক্তি যিনি ওই সুইস ব্যাংকের ৬০০ জন ভারতীয় অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম ফাঁস করেছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিদেশে গচ্ছিত সব কালো টাকা দেশে ফেরত আনবেন। সেইমতো, কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলের পরই সিট গঠনকে চূড়ান্ত আকারও দেন তিনি। মার্কিন সংস্থার এই প্রকাশিত তথ্য সেই তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।