নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বাগা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বোকো হারাম জঙ্গিদের হামলায় অন্তত ২ হাজার লোক নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে নিহতদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোকো হারামের বন্দুকধারীরা রকেট চালিত গ্রেনেড ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি।
বাগা এলাকার স্থানীয় সরকার বিভাগের চেয়ারম্যান মুসা বুকার বলেন, বাগা ও আশেপাশের ১৬টি গ্রামে চালানো এ হামলায় কমপক্ষে ২ হাজার লোক নিহত হয়েছে। বাগা ও আশেপাশের জঙ্গলগুলোতে শতশত মৃতদেহ ছড়িয়ে রয়েছে।
হামলার সময় পালিয়ে যাওয়া লোকজন পার্শ্ববর্তী জঙ্গলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ সময় বোকো হারামের দেওয়া আগুনে তাদের অনেকেই জীবন্ত পুড়ে মারা যান।
তবে স্থানীয় জেলা প্রধান বাবা আবা হাসান জানিয়েছেন হামলায় শতাধীক লোক নিহত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের গণনার পরই নিহতদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
অন্যান্য সূত্রগুলোও নিহতের সংখ্যা ২ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে বলে জানিয়েছে। হামলার পর বাগা ও আশেপাশের এলাকার জঙ্গলগুলোতে হাজারো মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
নাইজেরিয়া সরকারের বিচ্ছিন্নতাবাদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, গত ৩ জানুয়ারি চাঁদ সীমান্তবর্তী বাগা শহরটি দখলে নেয় বোকো হারাম। এরপর থেকে সেখানে সরকারি বাহিনী ও বোকো হারামের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিলো। গত বুধবার বোকো হারামের বন্দুকধারীরা আবারো শহরটিতে হামলা চালায়। শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিলো। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ হামলার ঘটনাকে বোকো হারামের এযাবৎকালের মারাত্মকতম গণহত্যা বলে মন্তব্য করেছে।
এর আগে ২০১৪ সালের ১৪ মার্চ নাইজেরিয়ার মাইদুগুরি শহরের একটি সামরিক শিবিরে হামলা চালিয়ে ৬০০ জনের বেশি লোককে হত্যা করে বোকো হারাম। নাইজেরিয়ায় ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ২০০২ সালে নাইজেরিয়ার বোর্নো প্রদেশের রাজধানী মাইদুগুরিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বোকো হারাম। ২০০৯ সালে এ ধরনের হামলা শুরুর পর গত ৫ বছরে বোকো হারামের হামলায় ১০ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছেন। হামলার কারণে দেশটিতে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন; এছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ চাঁদে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন হাজারো মানুষ।