মুদ্রা পাচার এবং জঙ্গি সংগঠনের মদদ দাতা হিসেবে কাজ করার অপরাধ প্রকাশ হওয়ার পর আইনের ভয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাই কমিশনের ২ কর্মকর্তা। মুদ্রা পাচারের অভিযোগে পাকিস্তান হাইকমিশনের সহকারী ভিসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহার খানের সঙ্গে শাহনাজ কাওসারের ব্যাংক হিসাব তলব করার পর পরই ২ জন বাংলাদেশ ছেড়ে গোপনে পালিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাই কমিশন সূত্র কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
এমনকি বারবার ফোন করার পরও কোন কর্মকর্তাই এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। উল্লেখ্য, গত মাসের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে হাইকমিশনের ঠিকানায় থাকা মোহাম্মদ মাজহার খান এবং শাহনাজ কাওসার নামে আরেক কর্মকর্তারও হিসাব তলব করা করে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু পাকিস্তান হাই কমিশনের পক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংককে কোন জবাব দেয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সূত্র। বিভিন্ন ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, তাদের নামে বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক হিসাব থাকলে খোলার আবেদন ফরম, কেওয়াইসি ফরম ও লেনদেনের বিবরণী সাত কর্মদিবসের মধ্যে দাখিলের পরামর্শ প্রদান করা হলো। চিঠিতে এ দুজেনর ঠিকানা হিসেবে দেয়া হয়েছে পাকিস্তান হাইকমিশন, গুলশান-২, ঢাকা।
জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারি বনানী মৈত্রী মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোপন বৈঠকের সময় পাকিস্তান হাইকমিশনের সহকারী ভিসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহার খান ও মজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় মাজহার খান তার হাতে থাকা বেশকিছু কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেন। ওই ছেঁড়া কাগজপত্রের মধ্যে একাধিক বাংলাদেশী পাসপোর্টও ছিল। পরে তাদের বনানী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সে রাতেই পাকিস্তান দূতাবাসের প্রথম সচিব সামিনা মাহতাব মোহাম্মদ মাজহার খানকে ছাড়িয়ে নেন। ছেঁড়া পাসপোর্টে যে ব্যক্তিদের নাম দেখা যায়, সেগুলোয় এমন তিন ব্যক্তির নাম রয়েছে, যারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পরে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, মজিবুর রহমান মূলত মাজহার খানের পক্ষে মুদ্রা জাল করার কাজে জড়িত ছিলেন। পরে একসময় গোপনেই বাংলাদেশ ছাড়েন মাজহার খান।