আরোহীদের অবস্থা সম্পর্কে এখনো স্বচ্ছ কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আরোহীরা সবাই মারা গেছে। যাত্রীদের অধিকাংশ জার্মানি ও স্পেনের নাগরিক। ফ্রান্সের বিমান কর্মকর্তারা জানিয়েছে, আরোহীদের নামের তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, এদের মধ্যে ৪৫ জন স্পেনের নাগরিক। বাকিরা জার্মানির নাগরিক।
বিমান দুর্ঘটনা সম্পর্কে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টে ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ বলেছেন, যদিও এখনো কোনো তথ্য পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি, তবে দুর্ঘটনার অবস্থা থেকে আমাদের মনে হচ্ছে, কোনো আরোহী হয়তো বেঁচে নেই। ফ্রান্সের বেসরকারি বিমান কর্মকর্তারাও এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এই দুর্ঘটনাকে ট্র্যাজেডি উল্লেখ করে ওঁলাদ বলেন, ‘বিধ্বস্ত বিমানের আরোহীদের পরিবার ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে, সেখানে পৌঁছানো খুবই কঠিন।’ দুর্ঘটনার খবর শোনার পর জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে ওঁলাদ কথা বলেছেন।
এএফপির বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটে বিমানটি ‘বিপর্যয় সংকেত’ দেয়। তবে কী কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে, তাও এখনো জানা যায়নি।
সবশেষ খবরে রয়টার্স জানিয়েছে, তুষারময় আলপাইন অঞ্চলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, দুর্ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নাড কাজেন্যুভকে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিমকে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সের বিমান কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানিয়েছে, এয়ারবাস এ৩২০ বিমানটি মঙ্গলবার ডিজনির কাছাকাছি আল্পসে বিধ্বস্ত হয়েছে। ফ্লাইট নম্বর ৪ইউ ৯৫২৫। বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি জার্মান বিমান কোম্পানি জার্মানউইংসের। স্থানীয় সময় সকাল ৯টার কাছাকাছি বার্সেলোনা থেকে উড্ডয়নের ৫২ মিনিট পরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
আরোহীদের মধ্যে ১৪৪ জন যাত্রী এবং ছয়জন ক্রু। ক্রুদের মধ্যে দুজন পাইলট ও চারজন অ্যাটেনডেন্ট।
স্পেনের বার্সেলোনা থেকে জার্মানির ডুসেলডর্ফে যাচ্ছিল বিমানটি। পথে ফ্রান্সের দক্ষিণাংশে বিধ্বস্ত হয় এটি। ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিমান কোম্পানি লুফথানসা যৌথভাবে এই ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।
ফ্রান্সের আঞ্চলিক পত্রিকা লা প্রোভেন্স-এর বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, বিমান কোম্পানি জার্মানউইংস বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর গণমাধ্যম থেকে জেনেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। জার্মানউইংয়ের অফিসিয়াল টুইটার বার্তায় এ কথা বলা হয়েছে।
লুফথানসার প্রধান নির্বাহী কার্সটেন স্ফোর টুইটে লিখেছেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার খরব যদি সত্যি হয়, তবে এটি হবে লুফথানসার জন্য অন্ধকার দিন। আমরা আশা করছি, আরোহীদের জীবিত খুঁজে পাব।’
এদিকে বিমান দুর্ঘটনার সময় সস্ত্রীক ফ্রান্স সফরে ছিলেন স্পেনের রাজা ফেলিপ। সফর বাতিল করে তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।