Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঘর ভেঙে নিল এনজিও, কাঁদছে অসহয় মা ও মেয়ে

kalkini-NGO

ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় বসতবাড়ি ভেঙে নিয়ে গেল বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আশার মাঠকর্মীরা। বাড়ির শূন্যভিটায় দাঁড়িয়ে কেঁদে চলেছেন মা নাসিমা বেগম ও তার মেয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী লিমা।

chardike-ad

শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর এলাকার কাচারিকান্দি গ্রামে। নাসিমা বেগম কাচারিকান্দি গ্রামের আলী খার স্ত্রী। বসতঘর ভেঙে নেয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অসহায় মা মেয়ে।

ভূক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসী জানায়, গেল ২ ফেব্রুয়ারি এনজিও আশার কালকিনি উপজেলার সমিতিরহাট ব্রাঞ্চ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন নাসিমা বেগম। চার কিস্তি দেয়ার পর সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। মেয়েরলেখাপড়াসহ অন্য খরচের চাপে কিস্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এরপরেও কিস্তি পরিশোধের জন্য অনবরত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে এনজিওর মাঠকর্মীসহ কর্মকর্তারা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি।

ঋণগ্রস্ত নাসিমার মেয়ে লিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমি এনায়েতনগর হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। আগামীতে আমার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু মায়ের ঋণের কারণে এনজিওর কর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য আমার স্কুলে গিয়ে ধর্ণা দেয়। অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বসে থাকাকালে সম্মানহানি হয় এমন সব কথা বলতে থাকে। এরপর সন্ধ্যার পরে এসে আমাদের ঘরে বসে থাকে। এতে লজ্জায় আমি কয়েকবার আত্মহত্যা

করতে গিয়েছি। কিন্তু আমার মা ও বাড়ির লোকজন ফিরিয়ে এনেছে। এখন তারা আমাদের শেষ আশ্রয় বসতঘরও ভেঙে নিয়ে গেছে। বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। জানিনা, আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো।’

নাসিমা বেগম বলেন, ‘কিস্তির টাকা দিতে না পারায় এনজিওর লোকজন কোত্থেকে এক লোক নিয়ে এসে বলে, তোমাদের থাকার ঘর ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। একথা বলেই ঘর ভেঙে নিতে শুরু করে। অসহায় হয়ে চোখের সামনে নিজেদের শেষ আশ্রয় নিয়ে যেতে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারি না।’

Kalkini-NGO-1

আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে নাসিমা বেগম বলেন, ‘এখন কোথায় গিয়ে মাথা গুজব তা জানি না। তারা আমাদের দেয়া চার কিস্তির টাকাও ফেরত দেয়নি।’

ঘরভেঙে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে এনজিও আশার সমিতিরহাট ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আব্দুর রউফ ও সহকারী ম্যানেজার নাজমুল হোসেন বলেন, ‘ঋণের কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারায় সেই পরিবারটিই ঘর বিক্রি করেছে। আমরা শুধু ক্রেতা ঠিক করে দিয়েছি।’