Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভুট্টাক্ষেতে মিলল কিশোরীর লাশ

rina

মাত্র ৩ বছর বয়সে বাবা-মাকে হারিয়ে একটি উচ্চবিত্ত্ব পরিবারে ঠাঁই মেলে রিনা আক্তারের (১২)। সেখানে পরিবারের বড় কর্তা জলিলুর রহমান সরকারকে বাবা বলেই ডাকতো সে।

chardike-ad

সারাদিন সংসারের কাজ কর্মের পাশাপাশি স্কুলেও যাওয়া আসা করতো মেয়েটি। হঠাৎ কেউ কিছু তাকে বললে, সে বলতো- দাঁড়াও বাবাকে গিয়ে বলছি। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায় রিনা। রাতভর খোঁজাখুঁজির পর শনিবার সকালে হতভাগ্য ওই রিনার লাশ মেলে বাড়ির অদূরে একটি ভুট্টাক্ষেতে।

ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের ঠ্যাংঝাড়া এলাকায়। স্থানীয় থানা পুলিশ শনিবার দুপুরে রিনার লাশ উদ্ধার করে লালমনিরহাট মর্গে পাঠিয়েছে।

এদিকে মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে হয়েছে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। তবে থানা পুলিশ বলছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু ধর্ষণের বিষয়টি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলেই পরিষ্কার হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।

এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রিনা আক্তারের বাড়ি পার্শ্ববর্তী পাটগ্রাম উপজেলার মুন্সির হাট এলাকায়। প্রায় ৭/৮ বছর আগে মা-বাবা মারা যাওয়ার পর তার আশ্রয় মিলে হাতীবান্ধার সানিয়াজান এলাকার জলিলুর রহমান সরকারের বাড়িতে। সেখানে সে বাড়ির মালিককে বাবা বলে ডাকতো।

সারাদিন ঘর সংসারের কাজ করার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ঠাংঝাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তো। এরপর সেখান থেকে এনে ভর্তি করা হয় জলিলুর রহমান আনন্দ স্কুলে। কিন্তু কাজের চাপে নিয়মিত পড়াশোনা হয়নি তার।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই মেয়েটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এরপর গভীর রাত পর্যন্ত খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধান মেলেনি। পরে শনিবার সকালে মেয়েটির লাশ বাড়ির অদূরে একটি ভুট্টাক্ষেতে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। সেখান থেকে শনিবার দুপুরে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভুট্টাক্ষেতের মাঝে উপুর হয়ে পড়ে আছে কিশোরী রিনার লাশ। লাশের পিঠের দিকে জামার অনেকটা অংশই ছেঁড়া। পায়ের একটি আঙুলে রক্তের দাগ লেগেছিল। এসময় হতভাগ্য মেয়েটির লাশ দেখতে আসা গ্রামবাসীদের অনেকেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, অতি সরল প্রকৃতির মেয়ে ছিল রিনা। কেউ কিছু বললে, দৌড়ে গিয়ে তার পালিত বাবাকে নালিশ জানাতো।

ওই গ্রামের আনন্দ স্কুলের শিক্ষক আবু সাঈদ বলেন, অবুঝ মেয়েটি হত্যার শিকার হওয়ায় গ্রামের লোকজন হতবাক বিস্মিত।

এদিকে মেয়েটিকে হারিয়ে শোকে বিহব্বল পালিত বাবা জলিলুর রহমান। তবে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁর কোন বক্তব্য বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাকির হোসেন বলেন, ভুট্টাক্ষেত থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কি না তা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসার পর স্পষ্ট বলা যাবে।