Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দ্বিগুণ সংখ্যক বিদেশী কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা জাপানের

japan_222

জাপানের শ্রমশক্তি ক্রমে সংকুচিত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় নিজেদের শ্রমবাজার চাঙ্গা করতে আরো বেশি বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটি। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের দুজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বর্তমানের তুলনায় বিদেশী কর্মী নিয়োগ দ্বিগুণ করার বিষয়টি নিয়ে সরকার ভাবছে এখন। খবর ব্লুমবার্গ।

chardike-ad

জাপানের ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) আইনপ্রণেতা ও প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বিশেষ উপদেষ্টা মাসাহিকো শিবায়েমা এক সাক্ষাত্কারে জানান, বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দ্বিগুণ করা সংক্রান্ত নীতিমালা গ্রহণের বিষয়টি ভেবে দেখছে তার সরকার। তিনি আরো বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অনেকগুলো কৌশল গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। এটি সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য না হলেও বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দ্বিগুণ করার প্রয়োজনীয়তা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আরো বেশি বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দেয়া যায়— এ ধরনের একটি টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

স্বল্প জন্মহারের পাশাপাশি বয়স্ক জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির সংকটে রয়েছে জাপান। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা ১২ কোটি ৭০ লাখ। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তা কোনোভাবেই ১০ কোটির নিচে নামতে দেবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সমস্যা সমাধানে প্রায়ই জাপানকে অভিবাসন বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়া হয়। তবে নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে খুবই রক্ষণশীল অবস্থায় থাকা জাপানের সমাজ ব্যবস্থায় এর প্রভাব নিয়ে আশঙ্কার কারণে বিদেশী কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি এখনো পোক্তভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

এদিকে পৃথক আরেক সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী আবের আরেক উপদেষ্টা ও সাবেক ভাইস অর্থমন্ত্রী ইয়াসতোশি নিশিমোরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের শরতেই বিদেশী শ্রমিক ‘প্রশিক্ষণ’ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ-সংক্রান্ত বিল পাস করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, এ ব্যবস্থার আওতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জাপানে বিদেশী শ্রমিকদের প্রবেশাধিকার দেয়া হয়। এছাড়া যেসব খাতে শ্রম ঘাটতি রয়েছে, সেখানে নতুন ক্যাটাগরির ভিসা দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ব্যবস্থাপনায় জাপানে বর্তমানে ১ লাখ ৯০ হাজার বিদেশী শ্রমিক কাজ করছেন। বর্তমান ব্যবস্থাপনায় বিদেশী শ্রমিকরা জাপানে তিন বছর অবস্থান করতে পারেন; এ ব্যবস্থা সংশোধনের মাধ্যমে তা পাঁচ বছরে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।

এছাড়া বর্তমান বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ ব্যবস্থা সংশোধনের মাধ্যমে শ্রমগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে প্রশিক্ষণ দেয়ার অনুমোদন দেয়া হবে বিভিন্ন কোম্পানিকে। সে সঙ্গে ব্যবসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ কর্মীদের নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হবে। বিদেশী কর্মীদের অনেক ক্ষেত্রেই অপব্যবহার করা হয়— এ ধরনের সমালোচনা শেষে উপদেষ্টা নিশিমোরা বলেছেন, পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থারও উন্নয়ন করা হবে।

ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে প্রযুক্তি শিল্প-বিষয়ক কর্মী আনার বিষয়েও আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। এছাড়া দেশের দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন শিল্পে কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন ভিসা ক্যাটাগরি নিয়েও কথা বলা হচ্ছে। বিদেশী পর্যটন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হলে অন্য দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি জাপানের মনোভাব অনেকটাই পরিবর্তন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিশিমুরা বলেন, বর্তমানে বিদেশী পর্যটকের সমাগম অনেক বেড়েছে। এ অবস্থায় আমি মনে করছি, দেশে বিদেশীদের আনাগোনা বৃদ্ধি নিয়ে জাপানবাসীর সংশয় অনেকটাই কমে আসবে। ফলে বলা যায়, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে যাবে।