Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

২ লাখের বেশি বাংলাদেশী কর্মী নেবে আমিরাত

uae-laborসংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশ এ মাসেই ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বসবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশ থেকে তারা কত সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করবে। মন্ত্রণালয় বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনবল নিতে আগ্রহী। তারা বিভিন্ন খাতে দুই লাখের উপরে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি আট দিনের জন্য ব্যক্তিগত সফরে অস্ট্রেলিয়া গেছেন। তিনি দেশে ফিরলেই আমিরাতের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের পর দেশটিতে শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে কর্মরত সাত লাখ বাংলাদেশী কর্মীর আকামা (চাকরি) পরিবর্তনের বিষয়টি অনুমোদন করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে বাংলাদেশী কর্মীরা তাদের ইচ্ছাতো চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন। আকামা পরিবর্তন একটি বড় কাজ হয়েছে বলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন। এতে কর্মীরা চাকরি বদল করে ভাল বেতনে চাকরি নিতে পারবেন।

chardike-ad

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সম্প্রতি বলেছেন, দেশটির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রী সাকর গোবাশ সাঈদ গোবাশের সঙ্গে তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অধিকসংখ্যক কর্মী নেয়া ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সরকারের কাছে বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠানো হবে। এ চাহিদার অনুকূলে কত সংখ্যক কর্মী তারা নেবে সে বিষয়টি ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে ঠিক হবে। প্রতিনিধি দল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক করবে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া কী হবে। তাছাড়া মানবসম্পদমন্ত্রী গোবাশ আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশী কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হবে।

দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক, মুসলিমপ্রধান দেশ, একই ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুভূতি ও পারস্পরিক অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্টতা বজায় রাখার জন্য পরস্পরের প্রতি একটি ঘনিষ্ঠতা আগে থেকেই বিরাজমান। বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অভিবাসন ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে একযোগে কাজও করে যাচ্ছে। উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামসমূহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সুষ্ঠু ও নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিভিন্ন ইস্যুতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। এতে কর্মীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিররাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় বিদেশী কর্মীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে জারিকৃত সর্বশেষ ডিক্রীসমূহের উদ্যোগকে প্রশংসা করে। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও অধিকসংখ্যক দক্ষ কর্মী নেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকে মন্ত্রণালয় সবচেয়ে ইতিবাচক হিসেবে বলছে। দুই দেশের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কী সিন্ধান্ত হয় সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, ২০১৬ সালে অন্যান্য দেশের কর্মীদের জন্য আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হয়। সে সময় বাংলাদেশের কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এবারের সফরের সময় দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশী কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেবে তারা। এতে বাংলাদেশী দক্ষ কর্মীরা উচ্চ বেতনে চাকরি পাবেন। আগে দেশটিতে প্রায় ২৩ লাখ বাংলাদেশী কর্মী কাজ করতেন। এখন সেখানে মাত্র সাত লাখ কর্মী কাজ করছেন। বাকি অবৈধ কর্মীদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছে। ২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশটি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছিল। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটি সফর করার পর আবার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী অল্পদিনের মধ্যে দেশটি সফরে যেতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর শ্রমবাজারটি আরও ইতিবাচক হবে। উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ লাখের বেশি কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি নারী কর্মী দেশটিতে কর্মরত। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের জন্য প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। জনকন্ঠ