ডাস্টবিনের পচা মাংস সরবরাহ হচ্ছে রেস্টুরেন্টে, সম্প্রতি এমন অভিযোগ ওঠার পর তোলপাড় চলছে পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে। এবার এই ঘটনায় পাওয়া গেছে আন্তর্জাতিক যোগসাজশের খবর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শুধু কলকাতার হোটেলগুলোতেই নয়, ভাগাড়ের পচা মাংস পাচার হত বিদেশেও। প্রক্রিয়াকরণের পর প্যাকেটজাত মাংস চলে আসত বাংলাদেশে। এই অবৈধ ব্যবসার মূলহোতাদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় পুলিশ।
মাত্র কয়েক দিন আগেই এই পচা মাংস সরবরাহের ঘটনা ফাঁস হয়। প্রথমে জানা গিয়েছিল বজবজ এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে মরা পশুর মাংস পাচার হত শহরের হোটেলগুলিতে। সস্তা দামের খাবারে যে মাংস দেয়া হত তা আসত ডাস্টবিন থেকেই। মরা পশুর মাংস পাচারের সঙ্গে যুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই চক্রের মূলহোতা সানির হদিশ মেলে। বৃহস্পতিবারই বিহারের নওদা থেকে গ্রেপ্তার করা সানিকে। তবে শুধু বজবজ নয়, ভাগাড় কাণ্ড ছড়িয়েছে আরও বিস্তীর্ণ এলাকায়। ট্যাংরা, কাঁকিনাড়া, জগদ্দল-সহ একাধিক জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। খোঁজ মেলে হিন্দুস্তান কোল্ড স্টোরের।
হিমঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে জমা রাখা হত টন টন মাংস। প্রথমে মরা পশুর মাংসকে বিভিন্ন রাসায়নিকের সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করা হত। পরে তা প্যাকেটজাত করে রাখা হত হিমঘরেই। দেখে মনে হত একেবারে আসল টাটকা মাংসের মতোই। এই মাংসই চালান হত নিম্নদরের হোটেলে।
শুধু তাই নয়, তদন্তে নেমে ভারতীয় পুলিশ জানতে পেরেছে, চক্র ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরেও। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ও নেপালেও পাচার হত পচা মাংস। প্যাকেটজাত মাংসই ছড়িয়ে দেয়া হত ওই দুটি দেশে। টাটকা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হত এই ভাগাড়ের পচা মাংস। পুরো ব্যবসায় মধ্যস্থতা করত বেশ কয়েকজন। সানিকে জেরা করেই এই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সেই আন্তর্জাতিক চোরাচালানকারীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
ভারতীয় পুলিশের অনুমান, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা ছাড়াও এই চক্রে আরও বড় প্রভাবশালী কেউ যুক্ত। তাদেরই খোঁজে হন্যে পুলিশ। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। খোঁজ চলছে যোগসাজশকারীদেরও।