আর্থিক সঙ্কটে বাংলাদেশ বিমান, ঋণ নিয়ে কর্মচারীদের বেতন

bangladesh-bimanনগদ টাকার সংকটে পড়েছে রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। গত মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত আয় না হওয়ায় আর্থিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। টাকার অভাবে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও দিতে পারছে না। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে এই সংস্থাকে।

জানা গেছে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নতুন বিমান ক্রয়, ডলারে মূল্যের তারতম্য, উচ্চমূল্যে লিজে আনা বিমান, মার্কেটিং বিভাগের দুর্বলতা, কার্গোতে আয় কমে যাওয়ায় তারল্য সংকট ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে। এছাড়া বেশকিছু খাতে বিনিয়োগ করতে হয়েছে এই এয়ারলাইন্সকে।

২০০৮ সালে সংস্থাটি ২০০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যে ১০টি বিমান ক্রয়ের জন্য বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী নিয়মিত প্রতিটি বিমানের বিপরীতে কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে এয়ারলাইন্সটিকে। ইতোমধ্যে বোয়িং চুক্তির ১০টি থেকে বহরে যুক্ত হয়েছে ছয়টি বিমান। এর বিপরীতে ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাকি চারটি বিমানের মধ্যে দুটি যুক্ত হচ্ছে এ বছর। অন্য দুটি যুক্ত হবে ২০১৯ সালে। এ চারটি বিমানের কিস্তির টাকাও পরিশোধ করছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে এসব বিমানের বীমার টাকাও পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদেরকে।

এছাড়া বহরে যুক্ত হতে যাওয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানের জন্য পাইলট, কেবিন ক্রু, প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণের পেছনে ব্যয় করতে হচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা।বাংলাদেশ বিমান সূত্রে জানা গেছে, হজ মৌসুমে ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখতে এসিএমআই পদ্ধতিতে চারটি বিমান সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে তিনটি। এসিএমআই পদ্ধতিতে যে সংস্থা বিমান সরবরাহ করে তারা বিমানের পাশাপাশি ক্রু, মেইন্টেন্যান্স ও ইন্সুরেন্সের বিষয়টিও নিশ্চিত করে। এসব কারণে এসিএমআই পদ্ধতিতে আনা বিমানের বিপরীতে উচ্চমূল্য পরিশোধ করতে হয়।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে মার্কেটিং বিভাগের দুর্বলতার কারণে প্রত্যাশিত আয় করতে পারেনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের শুরুর দিকে টিকিট বিক্রির হার কমে যায় তাদের। গত বছরের নভেম্বর থেকে বিভিন্ন অফার ও মূল্য কমিয়ে আগাম টিকিট বিক্রি করে নগদ অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করে রাষ্টায়াত্ত এই সংস্থা।
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছয়বার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় পরিচালন ব্যয়ও বেড়ে গেছে। যদিও এ কারণে ভাড়া বাড়ায়নি সংস্থাটি।

একই প্রসঙ্গে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন,‘একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আশা করছি, আমরা দ্রুত সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো। লাভ-লোকসানের হিসাব অডিট না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।’

সংবাদ উৎস- আমাদের সময়