Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

স্মার্টফোন চুরি রোধে জোটবদ্ধ শীর্ষস্থানীয় নির্মাতারা

সিউল, ১৭ এপ্রিল ২০১৪:

চুরি ঠেকাতে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সময় বেশকিছু সেবা চালু করেছে। এবার শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন নির্মাতারা একত্রিতভাবে নতুন সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অ্যাপল, গুগল, এইচটিসি ও স্যামসাং অন্যতম। ওয়্যারলেস পণ্য নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সিটিআইএ গত মঙ্গলবার এ চুক্তির ঘোষণা দেয়। খবর এনডিটিভির।

chardike-ad

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের মতো মোবাইল ডিভাইসের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে এ বাজারের ব্যাপ্তি হচ্ছে খুব দ্রুত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উন্নত প্রযুক্তির মোবাইল ডিভাইস বাজারে ছাড়ছে। এসব ডিভাইসের দাম নিতান্ত কম নয়। কিন্তু এ দামি ডিভাইসগুলো চুরি হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবহারকারী। গ্রাহকরা যাতে তাদের ডিভাইসগুলো নিরাপদে ব্যবহার করতে পারেন এবং চুরি হলেও তথ্য যাতে নিরাপদ থাকে, সে ব্যবস্থাই করতে যাচ্ছে মোবাইল ডিভাইস নির্মাতা চারটি প্রতিষ্ঠান।

smartphones_322সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে নতুন একটি সেবা চালু করবে। এ সেবার মাধ্যমে গ্রাহক তার মোবাইল ডিভাইস চুরি হয়ে গেলে দূর থেকে তা লক করার পাশাপাশি ডিভাইসে থাকা তথ্য মুছে দিতে পারবেন। ফলে গ্রাহক তথ্য ভুল হাতে পড়া থেকে রক্ষা পাবে। মোবাইল ডিভাইস হারিয়ে গেলে তা ট্র্যাক করার প্রযুক্তি অনেক আগের। তবে চারটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রয়াস এ সেবাকে আরো শক্তিশালী করবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

বিবৃতিতে সিটিআইএ জানায়, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব মোবাইল ডিভাইস বাজারে আসবে, তার প্রতিটিতেই নতুন সেবা যুক্ত থাকবে। আর যেগুলোতে থাকবে না, সেগুলোর জন্য গ্রাহকরা বিনামূল্যে ইন্টারনেট থেকে সেবাটি ডাউনলোড করার সুবিধা পাবেন।

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্নেইডারম্যান ও সানফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি জর্জ গ্যাসকন টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তাদের মতে, নতুন সেবাটিকে যথেষ্ট শক্তিশালী ও সন্নিবেশিত হতে হবে। তবেই মোবাইল ডিভাইস চুরি প্রতিরোধ ও তথ্য সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানগুলোর এ উদ্যোগ সফল হবে। ডাউনলোডের চেয়ে এ সেবা প্রতিটি ডিভাইসে শুরু থেকে ইনস্টল করে দেয়াই উত্তম হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

বিশ্বব্যাপী মোবাইল ডিভাইস চুরি যাওয়ার হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে লন্ডনে চোরাই স্মার্টফোনের বাজারের খবর পাওয়া গেছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় প্রতিটি দেশেই এ ধরনের চোরাই স্মার্টফোনের বাজার রয়েছে। স্নেইডারম্যানের কার্যালয় থেকে জানানো তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রেই ১৬ লাখ ব্যবহারকারী তার মোবাইল ডিভাইস হারিয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডিভাইসগুলো চুরি হওয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে।

চোরাই স্মার্টফোনের কারণে প্রকৃত বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ চোরাই স্মার্টফোনের বাজারে যেকোনো মোবাইল ডিভাইস মূল দামের চেয়ে অনেক কমে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে গ্রাহকদের মধ্যে চোরাই মোবাইল ডিভাইস কেনার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি ডিভাইস চুরির প্রবণতাকে উৎসাহিত করছে বলে করেন সংশ্লিষ্টরা।

অ্যাপল, গুগল, এইচটিসি, স্যামসাংসহ আরো ছয়টি প্রতিষ্ঠান নতুন সেবাটি যুক্ত করার ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেরিজন, এটিঅ্যান্ডটি, স্প্রিন্ট, টি মোবাইল ও ইউএস সেলুলার।

এ চুক্তিকে মোবাইল ডিভাইস ইতিহাসের মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন সিটিআইএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভ লার্জেন্ট। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণ গ্রাহকরা স্মার্টফোন নির্মাতাদের সরবরাহ করা নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারে উন্নত অভিজ্ঞতা পাবেন। তবে মোবাইল ডিভাইস চুরি হয়ে যাওয়া যে কারো জন্যই একটি বাজে অভিজ্ঞতা। এ সমস্যা সমাধানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ডিভাইস নির্মাতারা একত্রিত হয়েছে। সমন্বিত সেবাটি মোবাইল ডিভাইস চুরি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহক নিজেই তার বিভিন্ন তথ্য ডিভাইস থেকে মুছে দেন। কোনো ক্ষেত্রে গ্রাহক যদি তার ডিভাইসের তথ্য মুছে দেন, তারপর ডিভাইসটি চালাতে নিজস্ব আইডি ও পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি করে অ্যাপল ও স্যামসাং। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের সেবা মোবাইল ডিভাইসের চূড়ান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

মোবাইল ডিভাইসের বাজার ক্রমেই প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়ে উঠছে। এদিকে চোরাই স্মার্টফোনের বাজার এক্ষেত্রে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি করছে বলে অভিমত বাজার বিশ্লেষকদের। এ কারণে মোবাইল ডিভাইস চুরি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সূত্রঃ বণিকবার্তা।