‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শফিউল ইসলাম লিলন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। এখন শুধুমাত্র এর মূলহোতাকে গ্রেফতার করতে পারলেই এ হত্যাকাণ্ডের পুরো রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত মূল হোতাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। তার অবস্থানও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন তাকে গ্রেফতার করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
সোমবার বিকেলে আরএমপি কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হত্যাকাণ্ডের সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় নতুন কমিশনার মো. শামসুদ্দিন এ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত-শিবির এবং যুবদল ও ছাত্রদলের নেতারা সম্পৃক্ত। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে নিশ্চিত তথ্য রয়েছে এবং তদন্ত সেভাবেই এগিয়ে চলেছে।’
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে যে ১১ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং দুই দফায় রিমান্ডে নিয়েছে তাদের মধ্যে ৩ জন স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এরা হলো, রাজশাহী বিশ্বিবিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডি এবং বুধপাড়া এলাকার সাগর, আরিফ ও জিন্না। এদের বিরুদ্ধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে চার থেকে ছয়টি করে মামলা রয়েছে। এরা এসব মামলার পলাতক আসামি ছিল।
পুলিশ কমিশনার বলেন, সাগর, আরিফ ও জিন্নাকে জিঙ্গাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া র্যাবের অভিযানে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে রাজশাহী পাঠানো হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে আটক ৯ জনকে মুখোমুখি জিঙ্গাসাবাদ করা হবে। এর ফলে এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত হওয়া যাবে।
এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী কে? গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র্যাবের অভিযানে আটক পিন্টু ও মানিক একসময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এরা বর্তমানে যুবদলের রাজনীতি করেন। এদের দুজনের রাজনৈতিক নেতা জেলা যুবদলের একজন শীর্ষ নেতা। মূলত তার নির্দেশ এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে মানিক ও পিন্টু লোকবল সংগ্রহ করেছে। এরপর সময় ও সুযোগ বুঝে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, সাগর, আরিফ ও জিন্নাকে জিঙ্গাসাবাদে পাওয়া গেছে ওই মূল হোতার নাম এবং পরিচয়। তাদের কাছে বর্ণনা শোনার পর তার বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় শরীরে পরিধেয় বস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন ছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার তমিজ উদ্দিন, উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) তানভীর হায়দার চৌধুরী, উপ পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) নাহিদুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।