পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার ভাষ্য, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মাহিন নামের এক যুবকের সঙ্গে বিএনপির নয়, বরং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলমান ‘ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার’ এবং মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ আয়োজনে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কাকরাইল, মৎস্য ভবন হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, “মাহিন নামের যে ছেলেটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে আটক হয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি নেতাদের ছবি রয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি—এই ছবি কারো কাছে থাকলে তা বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে, বিএনপির ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা চলছে।”
তিনি দাবি করেন, হত্যাকাণ্ডের ভিডিওটি পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হয়েছে, যাতে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে আঘাত করা যায়। তার মতে, “বিএনপিকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে আসল চিত্র উল্টে ধরা পড়ে গেছে। মাহিনের সঙ্গে এনসিপির নেতাদের ঘনিষ্ঠতা প্রমাণ করে যে, এই হত্যাকাণ্ডের দায় অন্যদের ঘাড়ে বর্তানো উচিত।”
সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, “কেউ কেউ বলছেন—আওয়ামী লীগ গেছে যেই পথে, বিএনপি যাবে সেই পথে। কিন্তু অত সহজ নয়। এই বাংলাদেশই আমাদের স্থায়ী ঠিকানা। আমরা কোথাও পালিয়ে যাব না।”
দেশবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “মিটফোর্ডের ঘটনার ছবি দেখে নিজেরা বিশ্লেষণ করুন। সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে বিএনপিকে অকারণে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ঠিক নয়। বিএনপিই এই দেশের স্বাধীনতা এনেছে, সেই স্বাধীনতা রক্ষাও করবে।”
চরমোনাই পীরকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, মানুষ বলছে উনি কোরআন-হাদিস পড়েননি, কোনো ইলম নেই। আমাদের প্রশ্ন—আপনি ধর্মীয় শিক্ষায় কোথা থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন? আওয়ামী লীগকে সহ্য করতে পারেন, কিন্তু বিএনপিকে নয় কেন?”
তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে বলেন, “এই দল কথার ফুলঝুরি ছড়ায়, অথচ কাজের বেলায় বসুন্ধরা আর সিটি গ্রুপ থেকে হাদিয়া নেওয়ায় ব্যস্ত। নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিএনপির ওপর নির্ভর করে, অথচ পিছন থেকে ছুরি চালানোর অপচেষ্টা করে।”
তারেক রহমানকে নিয়ে রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, “এক-এগারোর সময় তারেক রহমানের কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, কারণ তিনি দেশের পক্ষে ছিলেন। অনেকে প্রশ্ন করছেন, তিনি দেশে আসছেন না কেন? সময়মতোই আসবেন, কেউ আটকে রাখতে পারবে না। আজকে তাঁর জীবন হুমকির মুখে, তবুও তিনি দেশ ও গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।”




































