
গত বছরের জুলাইয়ে গণ–অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে নির্বাসিত সাবেক এই সরকারপ্রধান বলেন, বিক্ষোভ দমনের সময় কোনো ব্যক্তিগত নির্দেশ তিনি দেননি বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘মাঠপর্যায়ের ভুল’ থেকেই প্রাণহানি ঘটেছে।
বুধবার আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এএফপি এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য ইনডিপেনডেন্ট- তিনটি গণমাধ্যম একসঙ্গে ই–মেইল সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। পলাতক জীবনে এটিই শেখ হাসিনার প্রথম বক্তব্য উপস্থাপন।
দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানায়, নিহত আন্দোলনকারীদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না- এ প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতি হিসেবে আমরা যাদের হারিয়েছি, তাদের জন্য গভীর শোক জানাই- এটাই যথেষ্ট।”
শেখ হাসিনা দাবি করেন, আন্দোলনটি ছিল “সহিংস বিদ্রোহ” এবং দমন ছিল “সংবিধানসম্মত দায়িত্ব”।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের আবেদন রয়েছে। এ অভিযোগকে তিনি আখ্যা দেন “রাজনৈতিক প্রতিহিংসানির্ভর প্রহসন” হিসেবে।
১ হাজার ৪০০ নিহতের সংখ্যা “অতিরঞ্জিত” বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অডিও রেকর্ডিং বিকৃত করে ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
গণ–অভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট জীবন-ঝুঁকি এড়াতে দেশ ছাড়ার কথাও জানান শেখ হাসিনা। তবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই এখনো চালিয়ে যাচ্ছি।” আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো নির্বাচনের বৈধতা নেই- এ দাবি করে তিনি নির্বাচন বর্জনের হুমকিও দিয়েছেন।
তাঁর ভাষায়, “আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে বাধা দেওয়া হলে লাখো ভোটার ভোট দেবেন না- এটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।”
তবে নিজের শাসনামলে গুম হয়ে নিখোঁজ অসংখ্য মানুষের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ তথ্য অনুসন্ধানী দল জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত, কয়েক হাজার আহত হয়েছেন; বেশির ভাগই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বক্তব্য- বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।





































