মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে ঢাকা মহানগর পুলিশ নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাত ১টার দিকে তাদের বনশ্রীর বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যান খিলগাঁও থানার ওসি মঈনুল হোসেন ও মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আইজি সাহেব দেখা করতে বলেছেন বলে বাবুলকে ওরা নিয়ে গেল। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারছি না। যারা নিয়ে গেল তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।’
ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে গত ৫ মার্চ চট্টগ্রামে তাদের বাসার কাছে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে দুই শিশু ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় শ্বশুর বাড়িতে থাকছিলেন এসপি বাবুল আক্তার। তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পুলিশের ওসি হিসেবে অবসরে যান। বাবা আবদুল ওয়াদদু মিয়াও পুলিশে চাকরি করেছেন।
মিতু হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় যে মামলা হয়েছে, বাবুল আক্তার নিজেই তার বাদী। সে কারণে প্রায়ই তাকে নিজের দায়িত্বের বাইরেও পুলিশের কার্যালয়ে যেতে হতো বলে জানান শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আগেও ও রাতে গেছে। কিন্তু যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে এমন হয়নি। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না কেন? ফোন বাজছে, ধরছে না কেন? বাসায় দুই বাচ্চা কাঁদছে, মা তো আর নেই।’
তবে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে রামপুরা থানার ওসি (তদন্ত) সফিকুল ইসলাম জানান, তিনিও বিষয়টি শুনেছেন। তবে নিশ্চিত করে বলার মতো কোনো তথ্য তার কাছে নেই।
এদিকে মিতু হত্যায় সরাসরি জড়িত সন্দেহে আবু মুছা (৪৫) ও এহতেশামুল হক ভোলা (৩৮) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ভোলা একজন সন্ত্রাসী ছিলেন। এখন তিনি ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা।
আবু মুছা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। অনেক সময় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেন। তার বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার রানীহাট এলাকায়। এসপি বাবুল আক্তারের হাতে একবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে দু’জনই বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন।
মিতু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই)। তবে মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যদিও সবগুলো সংস্থা মিলে এখনও তেমন কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।




































