জার্মানির হাইওয়েতে গাড়ি চালাচ্ছিলাম ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার স্পিডে। জার্মানদের অনেক কিছু ভালো না লাগলেও একটি জিনিস ভালো, আপনি মনের সুখে হাইওয়েতে গাড়ি চালাতে পারেন। পাশের দেশ হল্যান্ডে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারের বেশি হলেই ক্যামেরার ক্লিক, ক্লিক। ১০০ ইউরো জরিমানা।
যাহোক যেটা বলছিলাম। হঠাৎ দেখলাম রাস্তায় বড় বড় করে জ্বলছে , “Tipp, Tipp, Tot”. সাধু বাংলায়, টিপ, টিপ, মরো। পাশে একটি মোবাইল ফোনের ছবি।
জার্মান যোগাযোগ মন্ত্রীর এই উপস্থাপনায় সত্যি অবাক হলাম। জার্মানির একটি নিরিক্ষায় দেখা গেছে যারা গাড়ি চালানোর সময় একহাতে স্টিয়ারিং ধরেন অন্য হাতে চ্যাট/ম্যাসেজের উত্তর দেন তারাই সবচেয়ে বেশি এক্সিডেন্ট করেন।
তবে বাংলাদেশে এটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ বাংলাদেশের ড্রাইভারদের দুই হাতে মোবাইল থাকলেও গাড়ি অটোম্যাটিক চলবে, আর যদি তাদের কিছু বলতে যান এই নিয়ে, সাথে সাথে উত্তর, “ক্যান, আপনেরা যে গাড়িতে উইটটা মোবাইল চালান, নিয়ম কি খালি আমাগো লিগা? আমাগো জরলি কতা থাকবার পারে না? হ্যাতেরে কেমনে বুঝাইবেন গাড়ি যাত্রীরা চালায় না, চালান তিনি নিজে!!!
যাইহোক আমার অফিসের একটি ঘটনার কথা মনে পড়ল। সহকর্মিণী ছলছল চোখে অফিসে এসেছেন। জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? উনি উত্তর দিলেন,
– ড্রাইভিং লাইসেন্স পুলিশে নিয়ে গেছে।
– কেন ?
– আর বলবেন না, মাত্র দু সেকেন্ডের জন্য গাড়িতে বসে ফেইসবুকে উত্তর দিচ্ছিলাম, এর মধ্যেই এই অলুক্ষণে কাণ্ড ।
আমি বললাম, আপনার আবার ভয় কোথায়? আপনার স্বামী তো পুলিশে কাজ করে।
উনি উত্তর দিলেন, ওই তো নিয়েছে।
আমি ভাবলাম, স্বজনপ্রীতি শব্দটি কি জার্মান অভিধানে নেই ?
লেখক- তরিকুল হক