আগামী ১৫-২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তৃতীয় দফায় এক বছরের জরিমানা ও এয়ার টিকিটের মূল্য পরিশোধ করে দেশে ফিরছেন লেবাননে অবৈধভাবে বসবাসরত ৪৭১ জন বাংলাদেশি। এদের মধ্যে শারীরিকভাবে অসুস্থ ২৪ জন রয়েছেন। বৈরুত থেকে এয়ার এরাবিয়ার ৬টি ফ্লাইটে তারা দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের হলরুমে অনুষ্ঠান করে নারী পুরুষ মিলিয়ে ৪৭১ জনের হাতে বিমান টিকিট তুলে দেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার। উৎফুল্ল প্রবাসীরা হাতে এয়ার টিকিট পেয়ে বৈরুত দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় শ্রম সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৫ মাস ধরে লেবাননে চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও ডলার সংকটের প্রভাব পড়েছে বিদেশি শ্রমিকদের উপর। বেশিরভাগ শ্রমিক চাকরিচ্যুত হওয়ার পাশাপাশি তাদের বৈধতা হারিয়ে স্বেচ্ছায় দেশে যাওয়ার জন্য দূতাবাসের সাহায্য কামনা করেছে। রাষ্ট্রদূত আশ্বস্ত করেন যারা স্বেচ্ছায় দেশে যেতে ইচ্ছুক তাদের সবারই নাম নিবন্ধন পর্যায়ক্রমে নেওয়া হবে।
এয়ার টিকিট নিতে আসা বৈধ কাগজবিহীন প্রবাসীরা জানান, লেবাননের বর্তমান অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আগের মতো কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। কাজ করলেও মালিক সঠিকভাবে বেতন পরিশোধ করছে না। কাজ হারিয়ে আমরা অনেকেই বেকার সময় পার করছি। খাবার খরচ ও ঘরভাড়া দিতে হিমশিম খাচ্ছি। দেশ থেকে টাকা এনে খরচ চালাচ্ছি। ডলার সংকটের কারণে ৫ মাস ধরে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারছি না।
তারা বলেন, প্রবাসে এভাবে আর কতদিন? অপেক্ষায় ছিলাম পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এখন আর পারছি না। তাই দেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৈরুত দূতাবাসকে অনুরোধ জানাই যেন আমাদেরকে স্বল্প সময়ে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
এর আগে দুই ধাপে বৈরুত দূতাবাসের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে ইচ্ছুক প্রায় ৫ হাজার অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশি দূতাবাসে নাম নিবন্ধন করেছিলেন। এ নিয়ে তিন দফায় ১ হাজার জন অবৈধ প্রবাসী দেশে ফেরার সুযোগ পেল। আরো প্রায় ২০ হাজার কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশি বৈরুত দূতাবাসে স্বেচ্ছায় নাম নিবন্ধন করে দেশে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী শ্রমিক।