‘গত ১৫ বছরে পুলিশে ৯০ হাজার আ.লীগ পরিচয়ে নিয়োগ’

 

chardike-ad

গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে যে লোকবল নিয়োগ হয়েছে তারমধ্যে ৮০-৯০ হাজার লোক আওয়ামী লীগের বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে মিট দ্য প্রেসে তিনি এসব তথ্য জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে যে লোকবল নিয়োগ হয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের লোক। সে সময় তার পূর্ব পুরুষের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তার বাবা-দাদা এবং চাচারা কী করেন, এসব খোঁজ নেওয়ার পর তাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে এ বাহিনীতে ২ লাখ পুলিশের মধ্যে ৮০-৯০ হাজার ওই দলের লোকেদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন তাদের মানবিক বিবেচনায় বাড়ি চলে যেতে বলতে পারি না।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ পুলিশে পাকিস্তানের অনেকেই কর্মরত ছিলেন। সে সময়ে কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করেও তাদের চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়নি। সেক্ষেত্রে এত বড় সংখ্যাকে বাদ দেওয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় পেশাদারিত্বের বাইতে যারা কাজ করেছেন তাদের অনেকেই পালিয়ে গেছেন। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই। যার মধ্যে অন্যতম চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সমাজ থেকে যদি প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। আপনারা চাঁদা দেবেন না—যারা চাঁদা নিতে আসেন তারা কীভাবে চাঁদা নেয়, সেটা আমরা দেখব। চাঁদাবাজির জন্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি কাজ করছি, দ্রুতই আপনারা দেখতে পারবেন।

জুলাই আগস্টের ঘটনা কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, যিনি আমার লোক হোক আর মামলার বাদী যদি তথাকথিত ব্যক্তিদের আসামি করে যারা চাঁদাবাজি করছেন তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

যেসব লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই আগস্টের ঘটনা কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। যেসব লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না। একই সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানের পরে অধিকাংশ মামলা হয়েছে কোর্টের নির্দেশে। এখানে আসামি সংখ্যা ছিল ২০০ প্লাস।

পুলিশ কমিশনার বলেন, এদের মধ্যে হয়তো দেখা যাচ্ছে এসব মামলায় অনেকে জড়িত ছিল না, গুটি কয়েক লোক জড়িত ছিল। কিন্তু এখন যেটা ঘটছে ওই মামলার বাদীরা ১০০ লোকের কাছে গিয়ে টাকা চাচ্ছে। এসব আসামির ভয়ের কিছু নাই, আমি তাদের অ্যারেস্ট করব না। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা আসবে, আমরা শুধু তাদের গ্রেপ্তার করব।

নগরবাসীর সমস্যা ও অভিযোগ শুনতে ডিএমপি সদর দপ্তরে একটি অভিযোগ সেল খোলা হবে। পাশাপাশি দ্রুতই ওপেন ডে আয়োজন করে নগরবাসী সমস্যা ও পুলিশের সেবার পরামর্শ নেওয়া হবে বলে জানান এ পুলিশ কমিশনার।