chardike-ad

চকরিয়ায় বিয়ের আট মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নিজের স্ত্রী উম্মে হাফসা তুহি (১৮)কে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে করে খুন করেছে তার স্বামী শওকত হাসান মেহেদী (২৪)। এ সময় বাধা দিলে শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর যখম করে ঘাতক।

শুক্রবার চকরিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মজিদিয়া মাদ্রাসা পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বামী শওকত হাসান মেহেদী (২৪)কে চকরিয়া থানার পুলিশের বিশেষ টিম গতরাতে লামা থানাধীন ইয়াংছা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করে। খুনি শওকত হাসান মেহেদী একই উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজম উল্লাহ পাড়ার আবুল হাসেমের ছেলে বলে নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার এসআই মোস্তাকিম।

নিহত উম্মে হাফসা তুহি চকরিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী আবদুল হামিদের মেয়ে। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন নিহতের মা পারভীন আক্তার (৩৮)। নিহত তুহির বাবা ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ জানান, আট মাস আগে আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায় মেহেদী। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর জের ধরে আমার মেয়েকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করতো। গত ৫ই ডিসেম্বর তুহি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমাকে খবর দিলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার মেহেদী আমার বাড়িতে আসে। শুক্রবার সকালে তুহিকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাধা দেই। আত্মীয়স্বজন নিয়ে এলে যেতে দেবো বলার পর মেহেদী চলে যায়। পরেদিন ঘাতক মেহেদী এসে তুহি ও তার মা’কে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তুহিকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত হওয়ায় আমার স্ত্রীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আহত পারভীন আক্তারকে চমেক হাসপতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পিতা আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে ৫ জন এজাহার নামীয় ও আরো ২-৩ অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলা দায়ের করেছে।

এলাকাবাসীর মানববন্ধন

এদিকে কক্সবাজারের চকরিয়ার এই চাঞ্চল্যকর হত্যা নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। তারা মা-মেয়ের হত্যাকারী শওকত হাসান মেহেদীর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার সময় চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কস্থ চকরিয়া জনতা শপিং সেন্টার থেকে শুরু করে চকরিয়া হাসপাতাল রোড় পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে পুরুষ ও মহিলা সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে ছুরিকাঘাতে নিহত পারভীন আক্তারের স্বামী ও মেয়ে, উম্মে হাফছা তুহির পিতা সাংবাদিক আবদুল হামিদ, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, চকরিয়া পৌরসভা জামায়াতের আমির আরিফুল কবির, চকরিয়া পৌরসভা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কুতুব উদ্দিন হেলালী, কক্সবাজার জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন কমিশনার, চকরিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদুল করিম এবং চকরিয়া পৌরসভা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফোরকানুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তরা বলেন, ছুরিকাঘাতে নিহত মা-মেয়ের হত্যাকারী শওকত হাসান মেহেদীকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড় ঘাতক শওকত হাসান মেহেদী পিতা মাতাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। বক্তরা আরো বলেন, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া পুলিশের বিশেষ অভিযানে ঘাতক শওকত হাসান মেহেদী দ্রুত সময়ে গ্রেফতার করেন, এজন্য মানববন্ধন থেকে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়াকে ধন্যবাদ জানানো হয়।