গরমে সচরাচর ঠোঁট ফাটে না। তবে এবারের গরম অন্য রকম। এ গরমে ঠোঁটও ফাটছে। কারণ, বাতাসের আর্দ্রতা কম। শুষ্ক আবহাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে ত্বকের ওপর। পানিশূন্যতা আর পরিবেশগত কারণেই মূলত এবার গরমেও ঠোঁট ফাটছে জানালেন বিশেষজ্ঞরা। ঠোঁট ফাটার মতো সমস্যা প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে, সেটাও জানালেন তাঁরা।
পানি খেতে হবে পর্যাপ্ত। সঙ্গে নানান রকম পানীয় ও রসাল ফল খেতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি হতে দেওয়া যাবে না। তেষ্টা পেলেই পানি খেতে হবে। ঠোঁট, মুখ কিংবা গলা সামান্য শুষ্ক বোধ করলেই সঙ্গে সঙ্গে পানির ঘাটতি মেটাতে হবে। রমজান মাসের বাকি দিনগুলোতে ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত পানি ও তরল খাবার খেতে হবে পর্যাপ্ত। রোদের প্রকোপও ঠোঁট ফাটার জন্য দায়ী হতে পারে। তাই ন্যূনতম ৩০ এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) সম্পন্ন প্রসাধন বেছে নিতে হবে। রোদ থেকে বাঁচতে ভালো মানের ছাতাও প্রয়োজন—এমনটাই বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্মরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. হরষিত কুমার পাল।
প্রসাধন প্রয়োজন
রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভিন বলছিলেন, শরীরের পানির ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি চাই এমন প্রসাধন, যা ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় রাখবে। লিপবাম কিংবা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে। শুকিয়ে এলে আবার লাগিয়ে নিতে হবে। চ্যাপস্টিক ব্যবহারে অভ্যস্ত হলে সেটিই ব্যবহার করতে পারেন। যেটিতে আপনি স্বচ্ছন্দ, সেটি সঙ্গেই রাখুন। তবে শরীরে পানির ঘাটতি রয়ে গেলে প্রসাধন ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে না বলেই জানান তিনি।
যত্নে থাক ঠোঁট
পানিশূন্যতা পূরণের প্রতি জোর দিলেন মিউনিস ব্রাইডালের রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমিনও। ঠোঁটের যত্নে আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি—
• দিনে তো বটেই, রাতেও নিয়ম করে ঠোঁটে প্রসাধন প্রয়োগ করতে হবে। ঠোঁট টান টান বোধ না করলেও সারা বছর এই নিয়মেই চলা উচিত।
• এমন লিপবাম বেছে নিন, যা তৈলাক্ত ভাব না এনে ঠোঁটকে রাখে নরম।
• রোজকার যত্নের পরেও প্রয়োজন বোধ করলে সামান্য দুধের সরের সঙ্গে সামান্য কাঠবাদাম গুঁড়া কিংবা সামান্য গোলাপের পাপড়িবাটা মিশিয়ে ঠোঁটের জন্য প্যাক বানাতে পারেন। সপ্তাহে ১-২ দিন। প্যাক তৈরির জন্য কাঠবাদামগুঁড়া করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া যেতে পারে। প্যাক লাগিয়ে মিনিট দশেক পর ধুয়ে ফেলতে পারেন। আধা ঘণ্টা রাখলে আরও ভালো।
শেষ কথা
পরিবেশগত কারণ ছাড়াও অ্যালার্জি কিংবা কোনো রোগের কারণে ঠোঁট ফাটতে পারে বছরের যেকোনো সময়। তাই সব নিয়ম মেনে চলার পরও যদি ঠোঁট ফাটে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।