কাশ্মিরের মারহামা গ্রামে হামলার পর পেহেলগামের দিকে যাওয়া মহাসড়কে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর টহলের একটি ছবি ২৩ এপ্রিল তোলা হয়। এই হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরের পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা এখন চরমে পৌঁছেছে, যা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত পাকিস্তানে সামরিক হামলা চালাতে পারে বলেও ধারণা করছে দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে বড় ধরনের সংঘাত এড়াতে ভারতকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় না দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়তে বাড়তে বড় কোনো সামরিক সংঘাতে রূপ নিক।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘কাশ্মিরে সাম্প্রতিক হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া যেন আঞ্চলিক উত্তেজনায় রূপ না নেয়—এই প্রত্যাশা আমাদের। আমাদের আশা, ভারত এমনভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়।’
ফক্স নিউজের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ নামের একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে মিলে হামলাকারীদের খুঁজে বের করুক এবং প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা করুক। আমরা এই পথেই সমাধান চাই। পরিস্থিতি আমরা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। দেখি কী ঘটে।’
ভ্যান্সের এই মন্তব্যের পেছনে রয়েছে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক মহড়ার প্রেক্ষাপট। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পুরোপুরি যুদ্ধাবস্থার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ট্যাংক, কামান এবং আধুনিক অস্ত্র নিয়ে একটি মহড়া চালিয়েছে। এতে কর্মকর্তারা থেকে শুরু করে সাধারণ সৈন্যরাও অংশ নেন এবং নিজেদের পেশাগত দক্ষতার প্রদর্শন করেন।
দুই দেশের সম্পর্ক বর্তমানে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। কাশ্মিরের ভারতশাসিত অঞ্চলে এক হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর নয়াদিল্লি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ তোলে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, এ ধরনের প্রচেষ্টা ‘অমূলক’ এবং ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।
এই টানাপড়েনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি জাতিসংঘও ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান যেন ‘অর্থবহ পারস্পরিক আলোচনা’র মাধ্যমে হয়।