প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শত চেষ্টা করেও মানুষের মন থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যায় নি। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “২১ বছর এ দেশে বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়াই নিষিদ্ধ ছিল। রেডিও-টিভিতে বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়া যেত না। সাহস করে কেউ নিতে চাইলে তাঁকে নির্যাতন করা হতো। কিন্তু শত চেষ্টা করেও মানুষের মন থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম তারা মুছে দিতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটি হত্যাকাণ্ড না। ঘাতকদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার সকল অর্জন ধ্বংস করে দেয়া এবং বাংলাদেশকে পাকিস্তানের একটি প্রদেশ বানানো। একটি রাষ্ট্র, স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করাই ছিল এদের লক্ষ্য। বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্যই ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে টার্গেট করেছিল। তারা আমাদের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। ফলে তারা একটি গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সার্বভৌম এবং প্রগতিশীল জাতি হিসেবে বাঙ্গালী জাতির উত্থান বাধাগ্রস্ত করতে বারবার তাকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারা যখন দেশকে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয় তখনি তাদের হীন চক্রান্ত প্রকাশ পায়। তবে বিশ্বাসঘাতকরা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার তিন মাসের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হয়।”
“আমার ভয়ভীতি নেই। আমি বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। আমি আমার বাবা-মা, ভাইদের একদিন হারিয়েছি। আমার এতটুকু জীবনের কী মূল্য আছে? কী পেলাম আর কী পেলাম না, তা বড় কথা না। কী দিয়ে যেতে পারলাম, সেটাই বড় কথা। মৃত্যুর পর গিয়ে যেন বাবাকে বলতে পারি, আপনার বাংলার মানুষের জন্য এতটুকু কাজ করতে পেরেছি,” বলতে বলতে বাষ্পরুদ্ধ হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আলোচনায় আরো অংশ নেন, আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম ও এডভোকেট সাহারা খাতুন,দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা নির্মলেন্দু গুনের কবিতা পাঠ করেন।