বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজনীতি ১৯ জুলাই ২০২৫, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

সোহরাওয়ার্দীতে আজ জামায়াতের ‘জাতীয় সমাবেশ’


jamatরাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার বেলা ২টায় ‘জাতীয় সমাবেশ’ করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রস্তুতি, প্রচার ও মাঠপর্যায়ের ব্যাপক কাজ করেছে জামায়াতে। এ সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় দলটি।

জুলাই সনদ ঘোষণা, গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ সাত দফা দাবিতে আয়োজিত এ জাতীয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এ সমাবেশে। এছাড়া আহত জুলাই যোদ্ধাদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। শনিবার ভোর থেকেই ঢল নামে নেতাকর্মীদের। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছেন দলটির নেতা–কর্মীরা। মিছিলে ‘সমাবেশ সফল’ হোক বলে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা। মেট্রোরেলেও জামায়াতের নেতা–কর্মীদের ভিড় রয়েছে।

দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা-উত্তর এই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করছে জামায়াত। আগামী জাতীয় নির্বাচন ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের পাশাপাশি গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই সমাবেশ হতে যাচ্ছে। সমাবেশে বড় ধরনের জমায়েত নিশ্চিত করতে রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে দলটি।

এ সমাবেশ ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের বেশকিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছে দলটি। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মিয়া গোলাম পরওয়ারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে:
১. সবাইকে সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ও মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ করা।
২. আমিরে জামায়াতের বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব স্থান থেকে সরবেন না।
৩. বৃষ্টি হলেও যার যার অবস্থানে বসে থাকতে হবে।
৪. জাতীয় পতাকা ব্যতীত ভিন্ন কোনো পতাকা প্রদর্শন করা যাবে না।
৫. মিছিল নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া যাবে না।
৬. যাতায়াত ও সমাবেশস্থলে বয়স্ক ও শিশুদের (যদি আসে) অগ্রাধিকার দেওয়া।
৭. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশে ১৫টি মেডিকেল বুথ ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার থাকবেন। কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হলে পার্শ্ববর্তী মেডিকেল বুথ থেকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
৮. অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও সমাবেশস্থলে আমাদের পোশাকধারী স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। শৃঙ্খলার স্বার্থে তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
৯. প্রত্যেকে সম্ভব হলে চাহিদামতো খাবার পানির বোতল সংগ্রহে রাখবেন।
১০. সমাবেশের কার্যক্রম শেষ হলে দ্রুত সময়ে সভাস্থল ত্যাগ করা।

আগত গাড়িসংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে:
১. প্রত্যেক গাড়ির সামনের দিকে নির্দিষ্ট তথ্যসহ স্টিকার লাগানো। যেখানে অঞ্চলের নাম, ড্রপিং পয়েন্ট, পার্কিং প্লেস, ড্রাইভারের নাম ও মোবাইল নম্বর, সংশ্লিষ্ট গাড়ির দায়িত্বশীলের নাম ও মোবাইল নম্বর লেখা থাকবে।
২. প্রত্যেক শাখা থেকে আগত গাড়িগুলো যতদূর সম্ভব একসঙ্গে রওনা করবে।
৩. ঢাকার ফ্লাইওভারে কোনো গাড়ি উঠবে না।
৪. গাড়িগুলো নির্দিষ্ট ড্রপিং পয়েন্টে ড্রপ করা এবং নির্ধারিত পার্কিং এরিয়ায় পার্কিং নিশ্চিত করা।
৫. সকাল ১০টার মধ্যে সব গাড়ি ঢাকায় নির্দিষ্ট ড্রপিং পয়েন্টে পৌঁছানোর চেষ্টা করা।
৬. কোনো গাড়ি নির্ধারিত ড্রপিং পয়েন্টে আসতে বা পৌঁছানো অসম্ভব হলে, যেখানে সম্ভব সেখানে গাড়ি অবস্থান করবে এবং প্রোগ্রাম শেষে সবাইকে সেখান থেকেই গাড়িতে উঠতে বলতে হবে।
৭. লাইনের গাড়িগুলো যথাসম্ভব নিজস্ব পার্কিংয়ে রাখার উদ্যোগ নেওয়া।
৮. গাড়ি পার্কিংয়ের সময় সিঙ্গেল লাইন পার্কিং করা এবং অন্য গাড়ির প্রবেশ ও বের হওয়ার জায়গা রাখা।
৯. ড্রপিং পয়েন্ট ও পার্কিং এরিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক এবং স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা মেনে চলা।
১০. সায়েদাবাদ, পোস্তগোলা, কদমতলী, মাতুয়াইল, কমলাপুর রেলস্টেশন, গাবতলী, মহাখালী, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, উত্তরা আজমপুর এবং সদরঘাটে ১০টি স্থানে অভ্যর্থনাকেন্দ্র থাকবে। প্রয়োজনে অভ্যর্থনাকেন্দ্র থেকে সহযোগিতা নেওয়া যাবে।