বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজনীতি ২০ জুলাই ২০২৫, ১১:২৬ অপরাহ্ন
শেয়ার

কক্সবাজারে সত্য উন্মোচন করার পর বাধা আসছে: নাহিদ ইসলাম



জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী কক্সবাজারে সত্যের মুখ উন্মোচন করেছেন। এ কারণেই বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আমাদের এক সংগঠকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আগেও বলেছি—বাধা দিলে বাধবে লড়াই, আজও সেই কথা বলছি।”

আজ রোববার রাত ৮টায় নগরীর ঐতিহাসিক বিপ্লব উদ্যানে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির সমাপনী সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি। নাহিদ বলেন, ‘এনসিপি তারুণ্যের শক্তি ধারণ করে, এ শক্তিকে থামানো যাবে না।’

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘চট্টগ্রামের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালে সমগ্র বাংলাদেশ বিদ্রোহ ঘোষণা করবে।’ তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ভিত্তি। এখানে যারা ষড়যন্ত্র করছে কিংবা চোখ তুলে তাকাচ্ছে, তাদের বলে দিতে চাই—চট্টগ্রাম নিয়ে খেলা নয়। এটা জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন।”

তিনি বলেন, এ শহরকে বছরের পর বছর অবহেলা করা হয়েছে। পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি। লুটপাট আর স্বার্থের রাজনীতিতে চট্টগ্রামকে অবহেলিত করে রাখা হয়েছে। আমরা চট্টগ্রামকে আধুনিক, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী শহরে পরিণত করতে চাই।

১ জুলাই শুরু হওয়া ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে এনসিপি শনিবার বিকেলে বহদ্দারহাট এলাকা থেকে চট্টগ্রাম নগরের কেন্দ্রীয় এই পদযাত্রা শুরু করে। গত বছরের ১৮ জুলাই আন্দোলনে পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন এই এলাকায়। সেই প্রতিরোধের স্মৃতিকে স্মরণ করেই পদযাত্রার সূচনা করা হয় এখান থেকে। পদযাত্রা বহদ্দারহাট থেকে মুরাদপুর, ষোলশহর হয়ে এসে থামে বিপ্লব উদ্যানে।

সমাবেশে দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “স্বৈরাচার পতন ঘটানো গেছে, কিন্তু রাষ্ট্র গঠনে আমরা সফল হইনি। এই ব্যর্থতা আমাদের জাতিগত চ্যালেঞ্জে রূপ নিয়েছে।”

তিনি বলেন, “যারা অতীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তারা জানতো এই দেশে একদিন টিকে থাকতে পারবে না। তাই আগে থেকেই সেকেন্ড হোম বানিয়েছে আমেরিকা, লন্ডন বা ভারতের মতো জায়গায়। কিন্তু আমরা যারা এখানেই থাকব, আমাদের রাষ্ট্র নির্মাণের দিকেই মনোযোগ দিতে হবে।”

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেনও। তিনি বলেন, “থানা, পাসপোর্ট অফিস, শিক্ষা ভবন—সব সরকারি অফিসেই সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার। এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া যাবে না।”

এনসিপির নারী ও যুব সংগঠনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সন্ধ্যার আগেই সভাস্থলে উপস্থিত হন। নেতা-কর্মীদের মিছিল আর স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিপ্লব উদ্যান।

সমাবেশকে ঘিরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এমনকি এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা যে হোটেলে অবস্থান করছিলেন, সেখানে ছিল ডগ স্কোয়াডের নজরদারিও।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনূভা জাবীন, যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।