গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। মানবাধিকার ও যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। তারই ধারাবাহিকতায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনির হারবার ব্রিজে অনুষ্ঠিত হলো এক ঐতিহাসিক বিক্ষোভ—‘মার্চ ফর হিউম্যানিটি’। ফিলিস্তিনের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন প্রায় একলাখ মানুষ।
রোববার (৩ আগস্ট) প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই লাখো মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন। উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, ফেডারেল এমপি এড হুসিক এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের সাবেক প্রিমিয়ার বব কারসহ অনেক বিশিষ্টজনও মিছিলে অংশ নেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষদের হাতে ছিল যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো নানা প্ল্যাকার্ড। এসময় স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সিডনি হারবার ব্রিজ, এর মধ্যে ছিল ‘শেইম শেইম ইসরায়েল, শেইম শেইম ইউএসএ’, ‘যুদ্ধবিরতি চাই – এখনই চাই’, ইত্যাদি।
অনেকেই পরিবার ও ছোট সন্তানদের নিয়ে মিছিলে যোগ দেন। তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে অংশ নেওয়া অ্যালে বেভিল বলেন, এটি হয়তো আমাদের দেশ থেকে অনেক দূরে, কিন্তু এর প্রভাব আমাদের জীবনেও পড়ে।
শিশু কোলে মিছিলে আসা জারা উইলিয়ামস বলেন, আমাদের সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। গোটা একটি জনগোষ্ঠীর ওপর জোরপূর্বক অনাহার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে—এটা মেনে নেওয়া যায় না।
সিডনির বিক্ষোভ ছাড়াও একই দিনে লন্ডন, নিউইয়র্ক, প্যারিস, বার্লিন, কেপ টাউন, টোকিওসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে ছোট-বড় প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি বিক্ষোভেই যুদ্ধবিরতি, শিশু হত্যার অবসান এবং ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ ওঠে।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজার যুদ্ধে ইসরায়েলের নির্বিচার ও গণহত্যামূলক হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার পেরিয়েছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার ও মানবিক সংস্থাগুলো বলেছে, তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে গাজায় ফিলিস্তিনিরা অনাহারে ভুগছেন এবং অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গাজায় মানবিক বিপর্যয় ও যুদ্ধাপরাধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্বজনমত আরও তীব্র হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, “মানবতা আজ পরীক্ষার মুখে। এসব বিক্ষোভে মানুষের যে সাড়া, তা বিশ্বনেতাদের বিবেক নাড়া দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।”







































