রবিবার । ডিসেম্বর ২১, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আন্তর্জাতিক ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ৭:৪৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ

আনাস ছিলেন গাজার লাখো মানুষের কণ্ঠস্বর


Anas al-sharif
গাজায় আলজাজিরার খ্যাতনামা সাংবাদিক আনাস আল-শরিফের হত্যাকাণ্ডে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। মাত্র সাত মাস আগে, গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর সরাসরি সম্প্রচারের সময় প্রতিরক্ষামূলক পোশাক খুলে উদযাপন করেছিলেন তিনি। সেদিন গাজার মানুষ ভেবেছিল ২০ লাখ ফিলিস্তিনির দুর্ভোগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু সোমবার, ইসরায়েলের বিমান হামলায় সহকর্মী চারজনসহ নিহত হলেন ২৮ বছরের এই সাংবাদিক।

সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রবেশে বাধা থাকলেও আনাস দ্রুত লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে হয়ে ওঠেন গাজার কণ্ঠস্বর। আগে খুব একটা পরিচিত না হলেও সংঘাত, মানবিক বিপর্যয়, স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি ও দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি আরব বিশ্বে খ্যাতি পান। গত বছরের ডিসেম্বরে আলজাজিরায় যোগ দেন আনাস। এর আগেই এক হামলায় নিহত হন তাঁর বাবা।

আনাসের জীবনের বড় অংশ কেটেছে যুদ্ধের মাঠে, হাসপাতালে, রাস্তায়, অ্যাম্বুলেন্সে, আশ্রয়কেন্দ্রে ও ত্রাণ গুদামে সংবাদ সংগ্রহ করে। তিনি নিজেই বলেছিলেন, “আমরা সাংবাদিকরা প্রায় ৩০-৪০টি ভিন্ন জায়গায় ঘুমিয়েছি।” ছোট দুই সন্তানের এই পিতা গাজার মানুষের দুর্দশা বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে ছিলেন অবিচল।

এই হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, তিউনেসিয়া, নরওয়ে, সুইডেনসহ বহু দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে এনবিসি, ফক্স নিউজ, আইটিএন ও দ্য গার্ডিয়ানের অফিসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানান।

পেন আমেরিকা একে যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছে, নিন্দা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক ইউনিয়নও। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলের হামলা ও অবরোধে অনাহারে আরও পাঁচজন, যার মধ্যে দুই শিশু, মারা গেছে। একদিনে নিহত হয়েছেন মোট ৮৯ জন, আহত হয়েছেন ৫১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ৩১ জন ছিলেন ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষ।