মন্ত্রিসভা থেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর অপসারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভুইয়া।
এরআগে হজ নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার দুপুর দুইটায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াও ছিলেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পরই লতিফ সিদ্দিকীকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
হজ নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য তাকে যে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হবে তা আগেই জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তার মন্ত্রিসভার এই সদস্যের বক্তব্যের সঙ্গে সরকার একমত নয়। রাষ্ট্রপতি দেশে ফিরলে তাকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।
হজ পালনের পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শুক্রবার দেশে ফিরেছেন। মন্ত্রীকে অব্যাহতি তার মাধ্যমেই হয়। আর তার প্রজ্ঞাপন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞাও ছিলেন হজে। আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকও রবিবার বসছে। এই বৈঠকেও দলের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সফরে থাকার সময় গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী হজ নিয়ে মন্তব্য করেন। এরপর থেকে তা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। লতিফ সিদ্দিকী সেদিন বলেছিলেন, আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ায় দেশের অর্থ আর শ্রম শক্তির ‘অপচয়’ হয়।
তার ওই বক্তব্যের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে কয়েকটি ইসলামী দল আন্দোলনের হুমকি দেয়। তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি গ্রেপ্তারের দাবিও তোলে বিএনপি। লতিফ সিদ্দিকী ঈদ করার পর এখনও নিউ ইয়র্কে রয়েছেন। এর মধ্যেই ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অন্তত দুই ডজন মামলা হয়েছে।
এরপর দেশে ফিরে গত ৩ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, লতিফ সিদ্দিকী আর মন্ত্রিসভায় থাকবেন না।