Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আসছে আরো দুই দফা হরতাল

bnp-logo-flagচলমান অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে নতুন সপ্তাহেই যোগ হচ্ছে আরো দুই দফা হরতাল। এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি ও এর নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। জোটের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এই আভাস পাওয়া গেছে।

সূত্র মতে, সরকার সংলাপ শুরু না করা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি বহাল রাখার পক্ষে অনড় রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও জোটনেত্রী খালেদা জিয়া। বিএনপির দু-একজন নেতা ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনের কৌশলে পরিবর্তন আনা কিংবা এসএসসি পরীক্ষার সময় কর্মসূচি শিথিল করা নিয়ে আড়ালে আলোচনা করলেও খালেদা জিয়ার মনোভাব দেখে তাঁর কাছে বলার সাহস পাচ্ছেন না। বিএনপি ও মিত্র দলের কয়েক নেতা জানান, অবরোধও থাকবে; আবার এর সঙ্গে যোগ হবে হরতাল। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে বিএনপি। চূড়ান্ত হলে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করা হবে। কারণ ২০ দলের পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।

chardike-ad

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘অবরোধ চলছে, হরতালও হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার সংলাপের উদ্যোগ নিলে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করব। আর যদি সংলাপের ব্যবস্থা না করে জুলুম নির্যাতন অব্যাহত রাখে তাহলে কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনতেই হবে। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সামনের মাসেই অসহযোগের মতো কর্মসূচি থাকতে পারে।’

বিএনপির এক সিনিয়র নেতা জানান, সরকার ঢাকা সচল রাখতে চাইছে। তবে ঢাকায় যে আন্দোলন হচ্ছে তাতে খুশি বিএনপিপ্রধান। এরপর ঢাকাকে অচল করতে সব কয়টি মহাসড়ক বন্ধ করা হবে স্থানীয়ভাবে হরতাল দিয়ে। এটি বিএনপি বা এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন বা জোটের শরিকরা ডাকবে। আর অসহযোগের মাধ্যমে এই সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স ইত্যাদি না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংবাদ সম্মেলন বা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এটি জানানো হবে।

ওই নেতা জানান, এবার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’র ভাবমূর্তি আবারও তৈরি করতে চাইছেন খালেদা জিয়া। নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এক ধরনের আপসহীন ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল খালেদা জিয়ার।

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, দলীয় চেয়ারপারসনকে এর আগে এত অনড় অবস্থানে তাঁরা দেখেননি। তাঁদের মতে, গত ৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া আন্দোলনে খালেদা জিয়া এ পর্যন্ত মনোবল হারাননি বা কারো সঙ্গে নমনীয় হওয়ার মতো আলোচনাও করেননি। বরং গ্রেপ্তার হতে পারেন এমনটি জেনেও তিনি কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা অবরোধের শুরু থেকেই রয়েছেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানে তাঁর কার্যালয়ে। তিনি বলেন, ‘যাঁরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসছেন বা আমরা যাঁরা তাঁর সঙ্গে রয়েছি তাঁদের উল্টো সাহস দিচ্ছেন ম্যাডাম। বলছেন, সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করো। বিজয় আমাদের নিশ্চিত।’

অবরোধ চালিয়ে যেতে বলেছেন খালেদা : দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল শুক্রবার রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল। সাক্ষাতের পর সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বিএনপি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। তিনি এখন সুস্থ আছেন। বেগম জিয়া আমাদের বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশ না জানানো পর্যন্ত চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি চলবে।’

ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাহমিনা আখতার টফি, অধ্যাপক আবদুর রশীদ, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আমিনুর রহমান মজুমদার, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, এ বি এম ওবায়েদুল ইসলাম, অধ্যাপক মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক সারোয়ার উদ্দিন, অধ্যাপক মো. শফিউল্লাহ ও অধ্যাপক ইসরাফিল।