Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

লোকসানের মুখে অভ্যন্তরীণ রুটের বেসরকারি বিমান

ibrahim khalil-bimanনানা বৈষম্যের প্রভাবে লোকসানের মুখে পড়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ আকাশপথে পরিচালিত বেসরকারি বিমান। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যে একটি কোম্পানি বিমান ভাড়া কমানোর ঘোষণাও দিয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রায় ৭ বছর পর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করে বাংলাদেশ বিমান। রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটি প্রচারণার অংশ হিসাবে দেশের অভ্যন্তরীণ সকল রুটে মাত্র ২ হাজার ৭০০ টাকায় যাত্রী পরিবহনের ঘোষণা দেয়। ফলে যাত্রী হারায় বেসরকারি বিমান।

chardike-ad

সূত্রগুলো জানায়, অভ্যন্তরীণ রুটে সবচেয়ে কম ভাড়ায় ফ্লাইট চালাচ্ছে বিমান। ওয়ানওয়ের জন্য শুল্কসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ৪ হাজার টাকা, ঢাকা-কক্সবাজার সাড়ে ৫ হাজার টাকা, ঢাকা-সিলেট ৩ হাজার ২০০ টাকা, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-সৈয়দপুর ও ঢাকা-যশোর সাড়ে ৩ হাজার টাকা, ঢাকা-বরিশাল ৩ হাজার টাকা এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া ২ হাজার ২০০ টাকা। এরপরও যাত্রী টানতে অভ্যন্তরীণ সব রুটের ক্ষেত্রে ২ হাজার ৭০০ টাকা নির্ধারণ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি এয়ারলাইন্স রিজেন্টের এক কর্মকর্তা জানান, কম দামে টিকিট বিক্রি করায় অভ্যন্তরীণ রুটে বাংলাদেশ বিমান কিছুটা বেশি যাত্রী পেলেও সরকারকে ভুর্তুকি গুণতে হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি বিমানের তুলনায় কোন রকম শুল্ক সরকারকে দিতে হচ্ছে না। বিমানের এই বৈষম্যের কারণে লোকসানের মুখে পড়েছে বেসরকারী এয়ারলাইন্সগুলো।

সূত্র মতে, অভ্যন্তরীণ আকাশপথে সরকারি সংস্থা বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করছে। কিন্তু বিমানের বৈষম্যের কারনে যাত্রী সঙ্কটে পড়ে লোকসানের মুখে পড়ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো।

সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর আসন সক্ষমতা দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতিদিন বিমান কো¤পানিগুলোর আসন সংখ্যা গড়ে ৩ হাজার ৮শ থাকলেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে ১২শ থেকে ১৬শ জন। এ পরিস্থিতিতে কো¤পানিগুলো পরিচালন খরচ বহন করে ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহনে ভাড়া প্রসঙ্গে বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ারের কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, সরকারি সংস্থা বিমান অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালাতেই পারে। তবে এজন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। কারণ বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে বিমানবন্দর ব্যবহারসহ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন চার্জ পরিশোধ করতে হয়। তার সাথে জ্বালানি খরচ, ভ্যাটসহ আরো অন্যান্য খরচ রয়েছে। এসব কারণে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর পরিচালন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

অথচ বিমানকে অনেক চার্জই পরিশোধ করতে হয় না। বরং লোকসান হলে সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। সব ধরনের চার্জ পরিশোধের পর যদি বিমান কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতে পারে তাহলে ভালো। তা নাহলে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে লোকসানে ফেলে দেয়ার পাশাপাশি বিমানও লোকসানে পড়বে। যা এ খাতের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর এমন অভিমতের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে বাংলাদেশ বিমানের শাহ আমানত বিমান বন্দরের উড্ডয়ন কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো অভ্যন্তরীণ রুটে দীর্ঘদিন ধরেই বাড়তি ভাড়া আদায় করে আসছে। এক ঘন্টারও কম সময়ের ফ্লাইটে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের আকাশপথের ভাড়া ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো আন্তর্জাতিক রুটের সমান। যশোর থেকে ঢাকা রুটে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকা, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ভাড়া ৪ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা, নভোএয়ারের ভাড়া ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত।

এক্ষেত্রে যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে বিমান ওই রুটের ভাড়া নির্ধারণ করেছে মাত্র ৩ হাজার ৫০০ টাকা। আর ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে থাকলে যাত্রীদের অনেকেই উড়োজাহাজে চড়তে উৎসাহিত হবেন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রুটের ব্যবসাও চাঙ্গা হবে।

এ প্রসঙ্গে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলম জানান, অভ্যন্তরীণ রুটের এভিয়েশন খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে ভাড়া নিয়ে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ করা জরুরি। তা নাহলে লোকসানে পরে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো ঝরে পড়বে।(ঢাকাটাইমস২৪)