Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন স্কুলে চলছে আমেরিকা-বিরোধী যুদ্ধের প্রশিক্ষণ

২ মে ২০১৩, সিউল:

এক ঝাঁক খুদের দল৷ বয়স এগারোর কাছাকাছি৷ মাথা কামানো৷ চোয়াল শক্ত করে মুঠো হাত ছুড়ে দিচ্ছে হাওয়ায়৷ প্রশিক্ষণ চলছে তাইকোন্ডোর৷ স্থান মাংইয়ংদে রেভোলিউশনারি স্কুল৷ তৈরি হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার ভবিষ্যত্ সেনার দল৷ এমনটাই দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের৷ আর সেই কারণেই প্রশিক্ষণের পাশাপাশি রীতিমতো পরীক্ষা দিতে হচ্ছে খুদে যোদ্ধাদের৷

chardike-ad

সিউল ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের শত্রুতা যে শুধু বাগ্যুদ্ধে আটকে নেই, মাংইয়ংদে স্কুলে গেলেই মিলবে সে প্রমাণ৷ আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া-বিরোধী স্লোগান, ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত৷ প্রশিক্ষণ দিয়ে ছাত্রদের মনেও ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেই শত্রুতার মনোভাব৷

একুশ শতকেও পিয়ংইয়ংয়ের এই সামরিক স্কুলে পৌঁছয়নি ইন্টারনেট৷ স্কুলের খুদেরা কম্পিউটারে টাইপিং অভ্যেস করে৷ কী লিখবে তারা, সে বিষয়েও নির্দেশ দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ ইংরেজিতে যে বাক্যটি তারা বারবার লেখে তার বাংলা তর্জমা করলে হয়, ‘শ্রদ্ধেয় মার্শাল কিম জং-উন আমাদের পিতা৷’ এই বাক্যকে মূলমন্ত্র করেই শুরু হয় শিশুদের প্রশিক্ষণ৷ এক ছাত্র জো চাং হুউকের কথায়, ‘এখনকার কঠিন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমি আরও ভালো করে সব কিছু শেখার চেষ্টা করছি৷ গুলি ছোড়া, যুদ্ধ কৌশলের মতো বিষয়গুলিতে ভালো নম্বর পেলে তবেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিশোধ নিতে পারব৷ এটা আমাদের সকলেরই বৈপ্লবিক কর্তব্য৷’

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন মদতপুষ্ট দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধ কোনো নতুন ঘটনা নয়৷ সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উত্ক্ষেপণ এবং ভূ-গর্ভস্থ পরমাণু বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে জতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর সেই সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার অভিযোগ, ওয়াশিংটন ও সিউলের ষড়যন্ত্রেই জারি হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা৷ তা ছাড়া উত্তর কোরিয়ার দক্ষিণ সীমান্তে দক্ষিণ কোরীয় ও মার্কিন সেনার যৌথ অবস্থানে ক্ষোভ বেড়েছে উত্তরের৷
image_23860_0
কোরীয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ষাট বছর৷ আর এই ষাট বছর পূর্তির ঠিক আগেই বেড়েছে মার্কিন-বিরোধী প্রশিক্ষণ৷ কোরীয় উপদ্বীপ নিয়ে সমস্যা এখনও মেটেনি৷ উপরন্ত্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনার উপস্থিতি ক্রমশ ফাটল ধরাচ্ছে দু’দেশের সম্পর্কে৷ এর মধ্যেই চলতি মাসের প্রথমে দক্ষিণ কোরীয় ও মার্কিন যৌথবাহিনীর উপর আক্রমণের হুমকি দিয়েছিল উনের প্রশাসন৷ ওয়াশিংটন ও সোলের তরফে দাবি করা হয়, এমন কোনো বড় সড় আঘাত হানার প্রস্ত্ততি নিচ্ছে না উত্তর কোরিয়া৷

কথা বলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ক্ষেত্রে নিজে থেকে আগ্রহ দেখায়নি কোনও পক্ষই৷ শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছিল উন প্রশাসন৷ তবে দক্ষিণ কোরিয়া দাবিগুলিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছিল৷ দু’দেশের এই তিক্ত সম্পর্ক কি তবে ভবিষ্যতে আরও বড় আকার নিতে চলেছে? মাংইয়ংদে স্কুলের প্রশিক্ষণ তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে৷

উত্তর কোরিয়ার প্রথম সার্বভৌম শাসকের জন্মস্থানের কাছে গড়ে ওঠা ওই মিলিটারি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৭-এ৷ আবাসিক এই স্কুলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত জাপানিদের সঙ্গে যুদ্ধে নিহত সেনাদের সন্তানদের৷ প্রাক্তন নেতা কিম জং ইলও কোরীয় যুদ্ধের আগে আট মাস প্রশিক্ষণ নেন এখানে৷ সূত্র:নতুন বার্তা/ওয়েবসাইট।