Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তর কোরিয়ায় অস্বস্তিতে ওরাসকম টেলিকম

RUSSIA CREDIT

কায়রোভিত্তিক টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা কোম্পানি ওরাসকম টেলিকম। এটি মিসরের প্রথম বহুজাতিক কোম্পানি এবং ওরাসকম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহ করছে। উত্তর কোরিয়ায় কোরিওলিংক নামে টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহ করছে এ প্রতিষ্ঠান। দেশটির সংশ্লিষ্ট খাতে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই একক আধিপত্য বিস্তার করেছে কোরিওলিংক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় দেশটির সরকার পরিচালিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের কারণে আধিপত্য হারিয়েছে ওরাসকম টেলিকম। সংশ্লিষ্টদের দাবি, তারা উত্তর কোরিয়ায় কোরিওলিংকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

chardike-ad

মিসরের ধনকুবের নাগিব সোয়াইরিস ওরাসকম টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা। যিনি বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগ খাত থেকে শত শত কোটি ডলার কামিয়েছেন। নিউজিল্যান্ড থেকে শুরু করে পাকিস্তানের টেলিযোগাযোগ খাত পর্যন্ত যার প্রভাব আয় করেছেন। এমনকি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্ সেলফোন অপারেটর বাংলালিংকের একসময়ের অংশীদার ওরাসকম টেলিকম। নাগিব সোয়াইরিস বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে বিচ্যুত উত্তর কোরিয়ায় কোরিওলিংকের ব্যবসা নিয়ে বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

জানা গেছে, বৈশ্বিকভাবে অনেকটা সমাজচ্যুত উত্তর কোরিয়ায় ওরাসকমের প্রায় ৩০ লাখ গ্রাহক রয়েছে। কায়রোভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠান দেশটির টেলিযোগাযোগ বাজারে অত্যন্ত লাভজনক সেলফোন ব্যবসা গড়তে সক্ষম হয়েছিল। এছাড়া আর্থিকভাবে স্বচ্ছল দেশটির নাগরিকদের মধ্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সেলফোন সেবা। পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেয় দেশটির প্রশাসন। ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কর পরিশোধ ছাড়াই মোট ২৭ কোটি ডলার মুনাফা করে প্রতিষ্ঠানটি। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছিল ৩৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়, যখন উত্তর কোরিয়ার সরকার পরিচালিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব ঘটে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ওরাসকম টেলিকমের মুনাফার ওপর। ২০১৫ সালে এ সংকট আরো প্রকট হয়ে উঠে।

গত নভেম্বরে মিসরের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া নথিতে ওরাসকম টেলিকম জানায়, তারা উত্তর কোরিয়ায় তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ৭৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। বর্তমানে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে ওরাসকম টেলিকম উত্তর কোরিয়া।

সোয়াইরিস ওরাসকম টেলিকম এবং ওরাসকম টেলিকম উত্তর কোরিয়া উভয় প্রতিষ্ঠানেরই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। তিনি বর্তমানে উত্তর কোরিয়ায় বিদ্যমান পরিস্থিতির কার্যকর সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দেশটির শাসকগোষ্ঠী সোয়াইরিসের এ উদ্যোগে কতটুকু সাড়া দেবেন সেটা অনিশ্চিত। আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা উত্তর কোরিয়ায় কোরিওলিংকের টেলিযোগাযোগ ব্যবসা নিয়ে এখনো আশাবাদী। দেশটিতে ঝুঁলে থাকা সব ইস্যু সমাধানসাপেক্ষে আমরা আমাদের দীর্ঘদিনের সফল সেবাদান অব্যাহত রাখতে পারব।

ওরাসকম টেলিকমের একজন পর্যবেক্ষক বলেন, কোরিওলিংক বিষয়ে যে আলোচনার কথা বলা হচ্ছে, তা খুব একটা ফলপ্রসূ হবে বলে মনে হয় না। গত বছর জুন শেষে উত্তর কোরিয়ায় কোরিওলিংকের সব সম্পদ মিলে বাজার মূল্য দাঁড়ায় ৮৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। ওরাসকম টেলিকমের রাজস্ব এবং মুনাফা আয়ের ৮৫ শতাংশের জন্য দায়ী কোরিওলিংক। ওই পর্যবেক্ষক বলেন, স্থানীয় মুদ্রা বিনিময় নীতি এবং পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র ইস্যুকে কেন্দ্র করে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০১৫ সালে উত্তর কোরিয়া থেকে কোনো অর্থ বাইরে হস্তান্তর করতে পারেনি ওরাসকম।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, সোয়াইরিসের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে ঘিরে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া ওরাসকম সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে ঘিরে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। সূত্রঃ বণিকবার্তা।