যে কোনো মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ‘প্রস্তুত রাখতে’ সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং-উন। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক সামরিক মহড়ায় এমন নির্দেশ দেন তিনি। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসি।
বিশ্লেষকদের মত, উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘের নতুন করে অবরোধ আরোপের ঘোষণার প্রেক্ষিতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন কিম জং-উন। বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে উত্তর কোরিয়ার মিত্র চীনসহ সবগুলো সদস্য রাষ্ট্রই যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার পক্ষে সায় দেয়। উত্তর কোরিয়া যাতে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে না পারে, সেই চেষ্টাতেই নতুন এ নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা আসার পর পরই সাগরে স্বল্পপাল্লার ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে পাল্টা জবাব দেয় উত্তর কোরিয়া। বলা হচ্ছে, ওই সময়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানেই কিম জং-উন সামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ওই নির্দেশনা জারি করেন। এসময় তিনি যেকোনো সময়ে ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত রাখার আদেশ দেন। তিনি সেনাবাহিনীর ‘সমর কৌশল’ পরিবর্তন করে প্রয়োজনে ‘আগে আক্রমণে যাওয়ার’ প্রস্তুতি রাখতে বলেন। তিনি বলেছেন, ‘যেকোনো মুহূর্তে পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য আমাদের অবশ্যই সব সময় প্রস্তুত থাকা উচিত।’
শত্রুরা উত্তর কোরিয়ার ‘টিকে থাকার জন্য হুমকি’ হয়ে উঠছে বলেও অভিযোগ করেন কিম। ‘চূড়ান্ত এই সময়ে, আমেরিকা যখন অন্য দেশের ওপর যুদ্ধ আর ধ্বংস চাপিয়ে দিতে চাইছে; এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়ানো।’
এদিকে উত্তর কোরীয় নেতার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এটি বিদ্যমান উত্তেজনাকে ‘আরো তীব্র করে তুলবে’। পেন্টাগনের মুখপাত্র কমান্ডার বিল আরবান এমন ‘উসকানিমূলক পদক্ষেপ’ পরিহার করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি উত্তর কোরিয়া চতুর্থ পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী কঠোর সমালোচনা হয়। গত মাসেই উত্তর কোরিয়া দূরপাল্লার একটি রকেট উৎক্ষেপণ করে। সমালোচকদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ মিসাইল প্রযুক্তির পরীক্ষা চালিয়েছে দেশটি। কিন্তু উত্তর কোরিয়া বলছে, এটি ছিল স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের অংশ। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতেই পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।