Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রবাসীদের জন্য ৫% সন্তান কোটা চালু হচ্ছে

expatদেশের স্কুল-কলেজে প্রবাসী কর্মীদের সন্তানের ভর্তির জন্য মেধাভিত্তিক কোটা হচ্ছে। স্কুল ভর্তিতে প্রবাসী সন্তানদের ভর্তির জন্য ৫% কোটা রাখার প্রস্তাব করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। গত মাসে কমিটির ১৪তম বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির সুপারিশের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মতামত দিচ্ছেন। মতামতের ওপর গেল ৩০শে মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। পরবর্তী বৈঠকে সায় পেলেই আগামী বছর থেকে এ কোটা চালু করতে চায় সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আফছারুল আমিন মানবজমিনকে বলেন, সংসদীয় কমিটি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। গেল ৩০শে মার্চের বৈঠকে বিষয়টির চূড়ান্ত নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে পক্ষে-বিপক্ষে মত এসেছে। তবে প্রবাসী কোটা কীভাবে নির্ধারণ হবে তা নিয়ে আরও পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৪তম বৈঠকে এ প্রবাসী কোটা সুপারিশ করা হয়। এতে কমিটির সভাপতি মো. আফছারুল আমীন সভাপতিত্ব করেন। এ ব্যাপারে আফছারুল আমীন বলেন, প্রবাসী সন্তানদের জন্য কোটা চালু করার দাবি ছিল অনেক দিনের। এই দাবির প্রেক্ষিতে প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য মেধাভিত্তিক কোটা রাখার প্রস্তাব করেছি। এজন্য ভর্তি নীতিমালা সংশোধন করার সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়ার পর কমিটি সেটা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সুপারিশ করবে। তবে বিভিন্ন মহল থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। কিছু জটিলতার বিষয় এসেছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে এই কোটার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

chardike-ad

সংসদীয় কমিটির একজন সদস্য বলেন, প্রবাসীরা দেশের রেমিট্যান্সের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। দেশের বাইরে গিয়ে  তাদের সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়াতে চান বলে আমাদের জানান। তারা অভিযোগ করেন, দেশে না থাকার কারণে সন্তানদের প্রতি যত্ন নিতে পারেন না। তার সন্তান অন্তত একটি ভালো স্কুলে পড়লে তারা সান্ত্বনা পান। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমাদের এই প্রস্তাব। তবে প্রবাসী বলতে কাদের বোঝানো হবে সেটা আগে নির্দিষ্ট করতে হবে। এজন্য কমিটি প্রাথমিকভাবে দেশে যারা রেমিট্যান্স পাঠান তাদের প্রবাসী বলে গণ্য করবেন।

প্রবাসী সন্তানদের জন্য কোটা চালুর উদ্যাগকে স্বাগত জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত প্রবাসী ইছমাইল বলেন, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ আসনের পাশাপাশি কোটা পদ্ধতি চালু রয়েছে। একই ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাস নম্বর ৪০ হলেও কোটাধারীদের জন্য ৩৫। সাধারণ অনেকেই ৮০ নম্বর পেয়ে ভর্তির সুযোগ পায় না, অথচ ৩৫-৪০ নম্বর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পেয়ে যায় কোটাধারীরা। তিনি জানান, দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপর। অথচ তাদের সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়াশুনা করার জন্য বিশেষ কোনো কোটা নেই। তিনি বলেন, একজন প্রবাসী বিদেশে এসে ঋণের টাকা আর পরিবারের ভরণ পোষণ শেষ করতে করতে তার প্রবাস জীবন শেষ। এই কারণে ছেলে-মেয়েকে ঠিকমতো পড়ালেখা করাতে পারেন না। আর্থিক শূন্যতার কারণে অনেকে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করলেও পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য যাওয়ার সাহস করেন না। অবেশেষে বাবার পথেই ছেলে প্রবাসী। এতে অনেক প্রতিভাবান যুবক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ হারাচ্ছে। তবে প্রবাসী সন্তানদের জন্য কোটার চালুর উদ্যাগকে স্বাগত জানান তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ৫ ধরনের কোটা চালু আছে। চলতি বছর চালু হওয়া এরিয়া কোটা ৪০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা পাঁচ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের দুই শতাংশ, লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে অবস্থানরত শিশুদের জন্য শূন্য আসনের এক শতাংশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগর দুই শতাংশ, কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ কোটা।