জালিয়ানওয়ালাবাগ। নামটা শুনলেই মন না চাইলেও আবেগে চোখ ভিজে আসবে। আজ থেকে ১০৫ বছর আগে ১৯১৯ সালের আজকের দিনে ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক এবং ভয়াবহতম ঘটনা সংঘটিত হয়েছিলো। সেদিন অবিভক্ত ভারতবর্ষের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ঘটেছিলো ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড। যে ঘটনার কথা মনে করে আজও শিউরে ওঠেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া বীর সেনানীরা। কি ঘটেছিল আসলে সেদিন? তাই জানার চেষ্টা করবো আজ।
জালিয়ানওয়ালাবাগ এলাকাটি ছয় থেকে সাত একর জমির ওপর নির্মিত। এর আয়তন প্রায় ২০০ ফুট। এর চারপাশ পুরু দেয়াল দিয়ে আবৃত ছিলো যার উচ্চতা ১০ ফুট। জালিয়ানওয়ালাবাগের কেন্দ্রে একটি শ্মশান ছিলো যেখানে শিখদের কেউ মারা গেলে তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হতো এবং পানিতে পূর্ণ একটি কূপ ছিলো যার উচ্চতা ছিলো ২০ ফুট।
১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পর ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। আসলে এর শুরুটা ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন ভারতীয় উপমহাদেশের শাসনভার নেয়, তখন থেকেই। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ ছিলো ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র আন্দোলন। পরে ১৮৫৮ সালে ভারত-শাসন আইন পাশের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে শাসন চলে যায় ব্রিটিশ রাজপরিবারের কাছে। শাসক বদলালেও বদলায়নি অত্যাচারের মাত্রা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী প্রবর্তন করেছিলো বিভিন্ন অন্যায় আইন। যার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছিলো অধিকার আদায়ে সচেষ্ট বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তাঁদের লক্ষ্য ছিলো ইংরেজদের শাসনাধীনে থেকেই স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু পরে তাঁদের সেই লক্ষ্য পরিবর্তিত হয়। যদিও ব্রিটিশরা কখনোই সেই দাবী মেনে নেয়নি। এরপর বিভিন্ন ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা ঘটে। সেই যুদ্ধে জার্মানি ইংল্যান্ডের নেতৃত্বাধীন মিত্রশক্তির কাছে পরাজিত হয়। ব্রিটিশ সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো যুদ্ধে অংশ নিলে তাঁরা পরাধীন দেশগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেবে। যার ফলে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই সময় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথিকৃৎ মহাত্মা গান্ধীও ইংরেজদের সাথে এই বিষয়ে একমত হন।
কিন্তু ১৯১৮ সালে যুদ্ধ শেষের পর সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা গেলো। ইংরেজরা স্বায়ত্তশাসন তো দিলোই না উপরন্তু যারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো তাঁদেরকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করে গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে দেখা দেয় অর্থনৈতিক মন্দা এবং দুর্ভিক্ষ। এর ওপর ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীতে কয়েক কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। যার ফলে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরম উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছে যায়। বিরোধী মত দমন করতে ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন প্রণয়ন করতে শুরু করে। এসব কালো আইনের মধ্যে মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইন এবং রাওলাট আইন অন্যতম। ইংরেজদের এরূপ দমনপীড়ন দেখে ভারতবর্ষের স্বাধীনতাকামী সকল মানুষ যেমন সশস্ত্র আন্দোলনের দিকে ঝুঁকে পড়ে তেমনই মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অহিংস আন্দোলনও ব্যাপকভাবে শুরু হয়। এরইমধ্যে আবার রাওলাট আইন নামক সেই কালো আইন ১৯১৯ সালে প্রণীত হবার পর সেই ক্ষোভ যেন দাবানলের রূপ নেয়। গুজরাটের আহমেদাবাদের বিভিন্ন শিল্পের শ্রমিক এবং পাঞ্জাবের সাধারণ মানুষের মধ্যে আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। এরই মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের দুজন সংগঠক ড. সত্যপাল এবং ড. সাইফুদ্দিন কিচলুকে কুখ্যাত রাওলাট আইনের অধীনে গ্রেফতার করে অত্যাচারী ব্রিটিশ পুলিশ। দুজন স্বাধীনতা সংগ্রামীকে গ্রেফতার করায় পাঞ্জাব হয়ে ওঠে বিক্ষোভের এক জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি। রেল অবরোধ, টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীকে কঠোর জবাব দেয় পাঞ্জাবের সাধারণ মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় বিক্ষোভ দমাতে বর্বরতার নিম্নতম পর্যায় অবলম্বন করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী।
১৯১৯ সালের ১০ থেকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে আন্দোলন চরম উত্তেজনার রূপ ধারণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পাঞ্জাবের তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও’ডায়ার বিক্ষোভ দমাতে সশস্ত্র পথ অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য সে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কুখ্যাত অফিসার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ডায়ারকে পাঞ্জাবে ডেকে পাঠায় এবং প্রয়োজনে গুলিবর্ষণের নির্দেশ প্রদান করে। এদিকে ঘটনার একদিন আগে অর্থাৎ ১২ এপ্রিল ব্রিটিশ পুলিশের হাতে আটক সাইফুদ্দিন কিচলুর সহযোগী বিপ্লবী হংসরাজ পাঞ্জাবের হিন্দু কলেজে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় ঘোষণা করেন, আগামীকাল ১৩ এপ্রিল বিকেলে জালিয়ানওয়ালাবাগে সাইফুদ্দিন কিচলু এবং সত্যপালের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা হবে।
১৩ এপ্রিল ১৯১৯।
সেদিন ছিলো পাঞ্জাবের অন্যতম বড় উৎসব বৈশাখী মেলা। সেদিনকার দিনটি অন্যসব স্বাভাবিক দিনের মতোই শুরু হলেও পাঞ্জাবের সাধারণ মানুষ কখনো কল্পনাও করতে পারেননি কি ঘটতে যাচ্ছে এরপর। ১২ এপ্রিল ব্রিটিশ সরকার পাঞ্জাবে সবধরনের জমায়েত, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে এবং কারফিউ জারি করে। কিন্তু পাঞ্জাবের সবশ্রেণির মানুষ নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের উৎসবের জন্য অমৃতসরের হরমন্দির সাহিব স্বর্ণমন্দিরে (শিখদের প্রধান ধর্মীয় স্থাপনা) নিজস্ব প্রার্থনা শেষে জালিয়ানওয়ালাবাগে জমায়েত হতে শুরু করেন। ডায়ার তখন হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জালিয়ানওয়ালাবাগের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে। বিকেল নাগাদ প্রায় ২০,০০০ মানুষ সেই সময় সমবেত হন। বিকেল সাড়ে চারটার কিছু পরেই কুখ্যাত জেনারেল ডায়ার ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৫০ জন শিখ এবং গোর্খা সদস্যদের নিয়ে পৌঁছায় সেখানে।
সেদিন ডায়ারের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৯ম গোর্খা রাইফেলস এবং ৫৪তম শিখ রেজিমেন্টের (ফ্রন্টিয়ার ফোর্স) ৫০ জন সদস্য পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং জালিয়ানওয়ালাবাগে ঢোকার এবং বের হওয়ার সবগুলো পথ বন্ধ করে দেয়। হঠাৎই জনসভায় উপস্থিত হওয়া মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই সৈনিকরা তাঁদের থ্রি নট থ্রি এনফিল্ড রাইফেলের নল সাধারণ মানুষের দিকে লক্ষ্যবস্তু করে। এরপর শুরু হয় একটানা গুলিবর্ষণ যা চলতে থাকে টানা পনেরো মিনিট ধরে।
ব্রিটিশ সৈন্যদের এমন এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণের ফলে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। নিরস্ত্র মানুষ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সেখানে ব্যারিকেড সৃষ্টি করায় অনেকেই পালাতে পারেননি। ফলে ঘটনাস্থলেই অসংখ্য নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং কৃষক নিহত হয়। প্রাণভয়ে বাঁচতে “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” স্লোগান দিয়ে অনেকেই পাশের কূপে ঝাঁপ দেয়। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। সেদিনের সেই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিলো কয়েক হাজার। গুরুতর আহত হন অনেকেই। অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের জন্য ব্রিটিশ সাবেক সলিসিটর জেনারেল উইলিয়াম লর্ড হান্টারকে প্রধান করে হান্টার কমিশন গঠন করে। তাঁদের তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত ১৫০০ জন। অথচ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের হিসাবে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিলো কয়েক হাজার। আহত হয়েছিলেন অগণিত মানুষ। কংগ্রেস এ ঘটনাকে “কসাইখানা” সমতূল্য হিসেবে আখ্যায়িত করে। এ বর্বরোচিত ঘটনায় ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন আরো বেগবান হয়। সশস্ত্র আন্দোলনের মাত্রাও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত তাঁর নাইটহুড উপাধি ফিরিয়ে দেন। গান্ধীজী পাঞ্জাবে সেই ঘটনাস্থলে আসার পথে ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনার পর ব্রিটিশ সরকার নামেমাত্র তদন্ত করে এবং রেজিনাল্ড ডায়ার এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও’ডায়ারকে দায়মুক্তি প্রদান করে। ডায়ারকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হলেও কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়নি। তাছাড়াও রেজিনাল্ড ডায়ার এবং মাইকেল ও’ডায়ার – দুজনের কেউই জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ তো দূরের কথা, বিন্দুমাত্র আক্ষেপও করেনি। এরই মধ্যে ১৯২৭ সালে কুখ্যাত রেজিনাল্ড ডায়ার জন্ডিস এবং আর্টারিওস্কেলরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
এর কয়েক বছর পর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে সর্দার উধম সিং নামের এক স্বাধীনতাকামী বিপ্লবী ১৯৪০ সালের ১৩ মার্চ লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টারের ক্যাক্সটন হলে আয়োজিত এক সভায় উপস্থিত দর্শকদের সামনে মাইকেল ও’ডায়ারকে গুলি করে হত্যা করেন। কারণ তিনি জানতেন, নির্মম সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যতোটা রেজিনাল্ড ডায়ার দায়ী ছিলো, ততোটাই দায়ভার ছিলো মাইকেল ও’ডায়ারেরও। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের দিন উধম সিং জালিয়ানওয়ালাবাগে উপস্থিত ছিলেন, দেখেছিলেন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত এবং হাজার হাজার মানুষের মরদেহ। ওই দৃশ্য দেখেই তাঁর মধ্যে জেগেছিলো প্রতিশোধের স্পৃহা। মাইকেল ও’ডায়ারই ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি রেজিনাল্ড ডায়ারকে নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ দেয়। এমনকি যারা গুলিবর্ষণের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন, তাঁদের চিকিৎসার পথও বন্ধ করে দিয়েছিলো সে।
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড পরবর্তীতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথকে আরো সুগম করে এবং ব্রিটিশদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে করতে জনগণকে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ করে।
ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাজ্যের ওপর বারবার চাপ দিয়ে আসছিলো যেন তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য এই ব্যাপারে তেমন ফলপ্রসূ কিছুই করেনি। যুক্তরাজ্যের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং থেরেসা মে সেই বর্বরোচিত ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষমা প্রার্থনা করেননি।
জালিয়ানওয়ালাবাগ আজও নীরবে নিভৃতে কাঁদে। সেই আহত মানুষগুলোর অসহায় আর্তনাদ যেন আজও শুনতে পায় এর প্রতিটি ইটের কণা। ব্রিটিশ সৈন্য বাহিনীর ছোঁড়া প্রতিটা গুলির চিহ্ন আজও স্মারক হিসেবে সেখানে রয়েছে। ভয়াবহ সেই ঘটনার ১০৫ বছর পরেও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই স্থানটি। আজকের এই দিনে তাই বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো যারা সেদিনের ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন তাঁদের প্রতি।