Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গরিব ও ধনী প্রেসিডেন্ট যারা

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গরিব ও ধনী প্রেসিডেন্ট যারা

ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। অবশ্য অন্য ব্যবসাও আছে তার। ফলে নিউইয়র্কের এই ব্যবসায়ীর প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ কতো সেটা নির্ধারণ করা খুব কঠিন। তাছাড়া তিনি আয় বিবরণীতে তথ্য গোপন করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।

chardike-ad

ট্রাম্প যদি এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে নিঃসন্দেহে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে ধনী প্রেসিডেন্টের তকমা পাবেন তিনি।

১৯৭৪ সালে বাবা মারা গেলে ট্রাম্প উত্তরাধিকার সূত্রে যে সম্পত্তি পান তার অর্থমূল্য ৪০ মিলিয়ন ডলার। ব্লুমবার্গ ধারণা করছে, এ রিপাবলিকান প্রার্থীর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ২.৯ বিলিয়ন ডলার। যদিও ট্রাম্পের দাবি তার সম্পদ আরো বেশি। তিনি বলছেন, শুধু তার একক নামেই আছে ৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ।

অপরদিকে ডেমোক্রেক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনও কম সম্পদের মালিক নন। তিনি বিলিয়নেয়ার নন তবে সম্পদশালী নারী। ২০১৪ সালে যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন তখন তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার। স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনসহ তাদের সম্পদের পরিমাণ ১১ থেকে ৫৩ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে হবে।

অবশ্য আমেরিকার আগের প্রেসিডেন্টরাও কম সম্পদশালী ছিলেন না। যেমন: প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনও ছিলেন অত্যন্ত ধনী লোক। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ধনী পরিবারে জন্ম না নিলেও বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৫ মিলিয়ন ডলারের কম নয়। অবশ্য বেশিরভাগ টাকাই এসেছে তার বইয়ের রয়্যালটি থেকে।

এবার এক নজরে দেখে নেয়া যাক আগের ধনী ও গরীব প্রেসিডেন্ট কারা:

ধনী প্রেসিডেন্ট

আঙ্কল টেডি
আঙ্কল টেডি

১. পারিবারিক সূত্রেই বিপুল সম্পত্তির মালিক হন টেডি বা আঙ্কল টেডি। তার সম্পত্তির মোট অর্থমূল্য দাঁড়ায় ৬০ মিলিয়ন ডলার। নিউইয়র্ক, মেইনে এবং জর্জিয়ায় ছিল তার বাড়ি। তবে ১৯৪১ সালে মায়ের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত নিউইয়র্ক এস্টেটের সম্পত্তিগুলো হাতে পাননি তিনি। তিনি ছিলেন ফ্রাঙ্কলিন ডিলানো রুজভেল্টের পঞ্চমদশ পুরুষের ভাই।

হার্বার্ট হুভার
হার্বার্ট হুভার

২. হার্বার্ট হুভার টাকা বানিয়েছেন মূলত চাকরি করে। একটি খনি কোম্পানির নির্বাহী ছিলেন। ১৭ বছর চাকরি করেছেন, সম্পদ জমিয়েছেন ৭৫ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া বিভিন্ন খনি কোম্পানিতে তার শেয়ার আছে।

লিন্ডন বি জনসন
লিন্ডন বি জনসন

৩. লিন্ডন বি জনসনের মতো সুশীল পরিবার থেকে খুব কম প্রেসিডেন্টই এসেছেন। তার মূল বিনিয়োগ ছিল ব্রডকাস্টিং ইন্ড্রাস্ট্রিতে, পশু খামার এবং বেসরকারি বিমান সংস্থায়। তার নেট সম্পত্তি ছিল ৯৮ মিলিয়ন ডলার।

জেমস ম্যাডিসন
জেমস ম্যাডিসন

৪. জেমস ম্যাডিসনের জমি ছিল পাঁচ হাজার একর। তবে বেশিরভাগ উপার্জন করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে। তার সম্পদের মূল্যমান যখন সর্বোচ্চ ১০১ মিলিয়নে দাঁড়ায় তখনই লোকসানে পড়তে থাকেন। এসময় তার খামার ব্যবসায় মুনাফা কমতে থাকে।

জন এফ কেনেডি
জন এফ কেনেডি

৫. জন ফিটজেরাল্ড কেনেডির ব্যক্তিগত সম্পত্তি কমই ছিল। কিন্তু কেনেডি পরিবারের মোট সম্পত্তির অর্থমূল্য এক বিলিয়ন ডলার। কেনেডি পরিবারের নয় সন্তানের মধ্যে একজন হওয়ায় উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি যা পান তাতেই আমেরিকার ধনী প্রেসিডেন্টদের তালিকায় তার নাম চলে আসে।

অ্যান্ড্রু জ্যাকসন
অ্যান্ড্রু জ্যাকসন

৬. অ্যান্ড্রু জ্যাকসন টাকা বানিয়েছিলেন প্রাচীন পদ্ধতিতে। তিনি বিয়েই করেছিলেন এক ধনীর দুলালীকে। দেড় হাজার একর জমি এবং বিপুল সংখ্যক ক্রিতদাসের মালিক তিনি। যা টাকার মূল্যে হিসাব করলে কমপক্ষে ১১৯ মিলিয়ন ডলার।

টেডি রুজভেল্ট
টেডি রুজভেল্ট

৭. টেডি রুজভেল্ট উত্তরাধিকার সূত্রেই পান ১২৫ মিলিয়ন ডলারের একটি ট্রাস্ট ফান্ড। তবে জমির ব্যবসায় নেমে অনেক টাকা লোকসান দিয়েছেন। তারপরও লেখালেখি আর লং আইল্যান্ডে ২৩৫ একর জমি থেকে মোটেও কম আয় ছিল না তার।

টমাস জেফারসন
টমাস জেফারসন

৮. টমার জেফারসন, তারও জমিজমা অনেক ছিল। তার জমির পরিমাণ ৫ হাজার একর। টাকার হিসাবে সম্পত্তি ২১২ মিলিয়ন ডলার। তবে মৃত্যুর পর তার ঋণ শোধ করতেই পরিবারের লোকজনকে অনেক জমিজমা বিক্রি করে দিতে হয়েছে।

জর্জ ওয়াশিংটন
জর্জ ওয়াশিংটন

৯. আমেরিকার জাতির পিতা জর্জ ওয়াশিংটন, এ যাবত সবচেয়ে ধনী প্রেসিডেন্ট তিনি। তার মোট সম্পত্তির অর্থমূল্য ৫২৫ মিলিয়ন ডলার। অন্যান্য সম্পত্তির মধ্যে ছিল পটোমাক নদীর পাড়ে ৮ হাজার একরের রিয়েল এস্টেট। আরো ছিল ৩০০ জন ক্রিতদাস।

১০. জর্জ বুশ পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ৬০ মিলিয়ন ডলার।

গরিব প্রেসিডেন্ট

হ্যারি এস ট্রুম্যান, রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন সোজা বাংলায় বললে মনোহারির দোকানদার। কিন্তু একসময় তার কাপড়ের ব্যবসা দেউলিয়া হয়ে যায়। ওয়াশিংটনে ১৮ বছর থাকলেও তেমন পয়সাকড়ির মালিক হেতে পারেননি। কিন্তু টাকা জমানোর ভালো কৌশল জানতেন তিনি ফলে বাকি জীবনটা বেশ নিশ্চিন্তেই কেটেছে। তিনি এবং তার স্ত্রীই প্রথম সরকারি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেন।

২৫তম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাককিনলের ছিল মাত্র এক মিলিয়ন ডলারের সম্পদ। ১৮তম প্রেসিডেন্ট ইউলিসেস সিম্পসন গ্র্যান্টের সম্পদের পরিমাণ ছিল এক মিলিয়ন ডলারেরও কম। সবচেয়ে সৎ প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত আব্রাহাম লিঙ্কনের সম্পদের পরিমাণও গ্র্যান্টের মতোই।

সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা