Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যুক্তরাষ্ট্রে নিহত রায়হানের লাশ দেশে আনতে সহায়তা চায় পরিবার

raihan-familyযুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের অদূরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ময়মনসিংহ শহরের রায়হান ইসলামের (৩৫) পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার স্বজনেরা। স্বামীর মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রায়হানুলের স্ত্রী মার্জিয়া।

রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের আকুয়া জুবিলি কোয়ার্টার এলাকায় রায়হানের বাসা এবং নওমহল এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। রায়হানের ছবি নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শ্বশুর-শ্বাশুরি ও ভাইসহ স্বজনরা। ছোট ভাইয়ের লাশ দেশে আনতে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন বড় ভাই আনোয়ার হোসেন কাজল। আত্মীয়-স্বজনরা তাদেরকে সান্তনা দেয়ার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছেন না।

chardike-ad

স্থানীয়ভাবে ও একাধিক টেলিভিশনে প্রচারিত খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশ সময় রোববার ভোর পৌনে চারটার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে লংআইসল্যান্ডের সাউদার্নস্ট্রেট পার্কওয়ের এক্সিট ৩১-এ তাদের বহনকারী গাড়িটি একটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে গাড়িতে থাকা চার বাংলাদেশীর মধ্যে ভৈরবের আতাউর রহমান দুলাল ও ঢাকার মাতুয়াইলের শামসুল আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত ময়মনসিংহ শহরের রায়হানুল ইসলাম ও ভৈরবের আল আমিন মোল্লাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হলে গাড়ির চালক রায়হানুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

দুই মাস আগে গাড়িটি কিনেছেন রায়হানুল। সেই গাড়ি নিজেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে আমেরিকার পুলিশ।

রায়হান ইসলামের শ্বশুর শফিকুল ইসলাম মানিক ও শাশুরি মাসুদা বেগম জানান, তাদের কোনো ছেলে নেই। তিনটা মেয়ে। ছোট দুই মেয়ের মধ্যে একটা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বদ্যিালয়ে অধ্যয়নরত। বড় মেয়ে মর্জিয়ার সাথে যখন বিয়ে হয়, তখনও রায়হানুল লেখাপড়া করে। এসএসসি, এইচএসসি ও আনন্দ মোহন সরকারি কলেজে অনার্স পর্যন্ত পড়িয়েছেন রায়হানুলকে। এরপর ডিবি লটারি পেয়ে রায়হানুল আমেরিকা পাড়ি জমায়। একই সাথে তাদের মেয়ে মর্জিয়াকে নিয়ে যায়। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মেয়ের জামাতা হলেও রায়হানুলকে নিজের ছেলের মতোই স্নেহ করতেন। অনেক কষ্ট ও সংগ্রাম করে সুখের দেখা পেয়েছিলো। মাসদুয়েক আগে একটি গাড়ি কিনেছিল। সেই গাড়িই ছেলের জীবন কেড়ে নিলো।

রায়হানুলের বাবা ও মা নেই। বড় ভাই আনোয়ার হোসেন কাজল জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে রায়হানুল ইসলাম সবার ছোট। সে ছিল মেধাবী। তাকে ঘিরেই তাদের স্বপ্ন ছিলো অনেক। অভাবের সংসারের হাল ধরে তাদেরকে টেনে তুলছিল রায়হানুল। ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে তারা এখন দিশেহারা। ছোট ভাইয়ের লাশ দেশে আনতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন তিনি।