arrestহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা এক যাত্রীর লাগেজ কেটে দেশী-বিদেশী মুদ্রা চুরির অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ছয়জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (এএপিবিএন)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুটায় এপ্রোন এলাকায় এ এঘটনা ঘটে।

শুক্রবার বিকালে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের (এএপিবিএন ) সহকারী পুলিশ সুপার তারিক আহমেদ ছয় জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

chardike-ad

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, বিমানের লোডার শামীম হাওলাদার, লাভলু মিয়া, ট্রাফিক হেলপার নজরুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ ও আমিরুল ইসলাম।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুটায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (এমএইচ ১৯৬) থেকে সন্দেহজনক হিসেবে বিমানের লোডার শামীম হাওলাদার ও লাভলু মিয়াকে প্রথমে আটক করা হয়।

সূত্র জানায়, এ দুজনকে সন্দেহ হলে এএপিবিএন সদস্যরা প্রথমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও দেহ তল্লাশি করেন। এসময় শামীম হাওলাদারের জুতার সোলের ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ৯০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত এবং চার হাজার বাংলাদেশি টাকা পাওয়া যায়। আর লাভলু মিয়ার কাছে পাঁচ হাজার ৪০৮ টাকা পাওয়া যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, যাত্রীর ব্যাগ কেটে এই টাকা চুরি করেছেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে বিমানের ট্রাফিক হেলপার নজরুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ ও আমিরুল ইসলামকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারাও যাত্রীর লাগেজ কেটে চুরির কথা স্বীকার করেন।

এ প্রসঙ্গে এএপিবিএন- এর সহকারী পুলিশ সুপার তারিক আহমেদ বলেন, ‘আগে বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের লাগেজ কেটে মালামাল হারানোর অভিযোগ পাওয়া যেত। চুরি বন্ধ করার জন্য এএপিবিএন -এর বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে চুরির অভিযোগ কমে যায়। সম্প্রতি দেশ থেকে বিদেশে যাওয়া যাত্রীরা চুরির অভিযোগ করছেন। বিশেষ করে যেসব ব্যাগে টাকা বা মূল্যবান সামগ্রী থাকে সেসব ব্যাগকে টার্গেট করা হয়। চুরি করা হয় অভিনব কৌশলে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘চোরচক্র কৌশল বদলেছে। যেসব ছোট উড়োজাহাজে হাতে করে কার্গো হোল্ডে মালামাল তুলে রাখা হয়, সেগুলোতেই বেশি চুরির অভিযোগ আসে। এজন্য চোরদের ধরতে নজরদারি বাড়ানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে চুরির ঘটনায় বিমানের ছয় জন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। নিয়মিত মামলা দায়ের করে তাদের বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ওই রাতে বিমানবন্দর থেকে একাধিক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এমনিতেই বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। এর মধ্যে যদি আবার বিমানের কর্মচারিরা সেবার নামে যাত্রীর লাগেজ কেটে মালামাল সরিয়ে ফেলেন এর চেয়ে লজ্জার ঘটনা আর কি হতে পারে? এটা শুধু বিমানের নয়, দেশেরও ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। বিষয়টি বিমান কর্তৃপক্ষকে এখনই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে বলে তারা মনে করেন।