Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পৃথিবীর কিছু ছোট দেশ

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়ার মতো বড় বড় দেশগুলো পৃথিবী শাসন করছে। তাদের শাসন এবং কিছু আধিপত্য বিস্তারের কারণে অনেক দেশের নাম এবং তাদের অবস্থান সম্পর্ক জানতে পারে না বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষ। এমনকি ছোট দেশগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটিকে স্বীকৃতও দেয়নি অনেক দেশের সরকার। তবু পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, পাসপোর্ট, স্ট্যাম্প ইত্যাদি ব্যবস্থা জারি করে দিব্যি চলছে দেশগুলো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অদ্ভুত সব নিয়ম ও কাহিনীতে গড়া এই দেশগুলোর কথা নিয়েই আজকের আয়োজন-

Palau
পালাউ স্বচ্ছ নীল পানিতে ঘেরা ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রটি

পালাউ:
আয়তন: ৪৫৯ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা: ২১, ৩৪৭ জন

chardike-ad

বিভিন্ন আকৃতির ৩০০ এর বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দ্য রিপাবলিক অব পালাউ। পৃথিবীর অদ্ভুত সুন্দর কিছু জায়গার মধ্যে একটি হলো স্বচ্ছ নীল পানিতে ঘেরা ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। এই দেশটির রেইনফরেস্টগুলো একেবারে ভিন্ন সব গাছপালা ও পাখি দিয়ে ভরপুর। এছাড়া সেখানকার আঞ্চলিক জলসীমায় বিলুপ্ত প্রায় ১৩০ প্রজাতির হাঙর রয়েছে। ওশেনিয়া মহাদেশের নান্দনিক এই দ্বীপরাষ্ট্রের অসাধারণ দিক হলো, সেখানে দুই লাখ জেলিফিশের একটি লেক আছে। ওই লেকে বসবাসকারী জেলিফিসগুলো সময়ের পরিক্রমায় তাদের বিষ দাঁত হারিয়ে ফেলেছে।

sealand
দ্য প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড

দ্য প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড:
আয়তন: ০.০০৪ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা: ২৭ জন (দাবি অনুযায়ী), ৩ জন (অনুমোদিত নাগরিক)

ইংল্যান্ডের উত্তর সাগরে অবস্থিত পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম এই দেশটির নিজস্ব পতাকা, পাসপোর্ট ও মুদ্রা রয়েছে। সাগরের উপর ভাসমান অদ্ভুত এবং ছোট্ট এই রাষ্ট্রের একটি রাজধানীও রয়েছে। বড় বড় দুইটি স্টিলের পাইপের উপর দাঁড়িয়ে আছে প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি সমুদ্র-দুর্গ সেটি!

জার্মান সেনাদের আকস্মিক আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ইংল্যান্ডের উপকূলভাগে একটি সমুদ্র-দুর্গ বানানোর পরিকল্পনা করেছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে বানানো হয় সেটি। সেখান থেকে শত্রুর যুদ্ধ জাহাজগুলোর উপর নজরদারি করা হতো এবং প্রয়োজনে শত্রুর জাহাজে আক্রমণ পরিচালনার কাজও করতো। যুদ্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ওই দ্বীপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।

১৯৬৭ সালে এক ব্রিটিশ পরিবার এর স্বত্বাধিকারী হয় এবং একটি স্বাধীন মাইক্রো রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয়। পৃথিবীর কোনো দেশই সিল্যান্ডকে স্বীকৃতি না দিলেও কেউ এখনও পর্যন্ত তাদের বিরোধিতা করেনি। একই পরিবারের ৩ জন সদস্য এই দেশটির নাগরিক এবং তারা দেশটির রাজা, রানী ও রাজপুত্র।

sent-kids
সেন্ট কিটস্‌ এন্ড নেভিস

সেন্ট কিটস্‌ অ্যান্ড নেভিস:
আয়তন: ২৬১ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা: ৫২,৩২৯ জন

সেন্ট কিটস্‌ ও নেভিস নামের দুইটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দেশ সেন্ট কিটস্‌ অ্যান্ড নেভিস। ওই দেশের আয়ের অন্যতম উৎসগুলোর মধ্যে একটি হলো ইকোনমিক সিটিজেনশিপ প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামের আওতায় যে কেউ সেখানকার স্থানীয় চিনি কলে ন্যূনতম দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার ডলার বিনিয়োগ করে সেই দেশের নাগরিক হতে পারে। এছাড়া দুইটি দ্বীপের যেকোনো একটিতে ৪ লাখডলারের কম মূল্যের জমি কিনলেও নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।

দ্য প্রিন্সিপালিটি অব হার্ট রিভার:
আয়তন: ৭৫ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা: ২০ জন (স্থায়ী বাসিন্দা), ১৩,০০০ জন (পাসপোর্টধারী বাসিন্দা)

১৯৭০ সালে স্থাপিত দেশটি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে পুরাতন ও ক্ষমতাশালী ক্ষুদ্র জাতি। অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে ৬ হাজার কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত দ্য প্রিন্সিপালিটি অব হার্ট রিভার। এর প্রতিষ্ঠাতা লিওনার্দো জর্জ ক্যাসলি; যিনি তার খামারকে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র এবং নিজেকে সেই রাষ্ট্রের রাজা হিসেবে ঘোষণা করেন। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় তার আবক্ষ মূর্তি রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও দেশটির নিজস্ব মুদ্রা, ষ্ট্যাম্প ও পাসপোর্ট আছে।

molossia
দ্য রিপাবলিক অব মোলোসিয়া

দ্য রিপাবলিক অব মোলোসিয়া:
আয়তন: ০.০০৫ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা: ২৮ জন

যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ মরুভূমি নেভাডায় অবস্থিত এই ছোট দেশের প্রতিষ্ঠাতা কেভিন বাগ। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্টও। নিজ ঘরের পেছনে দশ হাজার ডলার বিনিয়োগে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন এই দেশ। দেশটির রয়েছে নিজস্ব জাতীয় সঙ্গীত, প্রতীক ও পতাকা। এছাড়া একটি ব্যাংক, ট্রেডিং কোম্পানি, আলাদা টাইম জোন, রেলপথ (খেলনা সদৃশ) ও মহাকাশ বিষয়ক প্রোগ্রাম আছে।

২৮ জনের জনসংখ্যার মধ্যে ৫ জন হলো কেভিনের পরিবারের সদস্য এবং তাদের ৩টি কুকুর, ১টি বিড়াল ও ১টি খরগোশ। বাকিরা এখন মোলোসিয়া ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রেই কোথাও না কোথাও থাকেন। গুরুতর কোনো অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডও ধার্য করা হয় দেশটিতে। মোলোসিয়া থেকে বের হওয়ার সময় একেবারে শেষপ্রান্তে রয়েছে ‘পাইনঅ্যাপেল ফাউন্টেন’ নামে একটি ছোট্ট ফোয়ারা। পেছন ফিরে কাঁধের উপর থেকে একটি পয়সা ছুঁড়ে ফোয়ারাটিতে ফেলতে পারলেই ওই দেশে আবার প্রবেশের অনুমতি পাওয়া যায়। ২০১৭ সালের মে মাসে দেশটির ৪০ বছর পূর্ণ হলো।

সোভার্ন মিলিটারি অর্ডার অব মাল্টা:
আয়তন: ৩১৬ বর্গ কি.মি.
জনসংখ্যা: ৪,১৯, ০০০ জন

ভ্যাটিকান সিটি ছাড়াও রোমে মাল্টা নামে আরেকটি ছোট দেশ রয়েছে। দেশটিতে ৩টি দালান রয়েছে; এর মধ্যে দুইটি রোমে এবং একটি মাল্টার দ্বীপে। ১৯৯৪ সাল থেকে দেশটির জাতিসংঘের সদস্য পদ রয়েছে। কূটনৈতিক বাণিজ্যের জন্য এখানকার কূটনৈতিকদের কাছে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার মতো স্থানীয় বাসিন্দা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অর্থনীতৈক বৈশিষ্ট্য নেই দেশটির।

new-thaimaa
ওশেনিয়ার ছোট্ট এই দ্বীপ নিউ

নিউ:
আয়তন: ২৬১ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা: ১,৬১৩ জন

ওশেনিয়ার ছোট্ট এই দ্বীপটির নান্দনিক সৌন্দর্য থাকা সত্বেও পর্যটকের সংখ্যা অনেক কম। তাই এই দেশটি বেশিরভাগ বাইরের দেশগুলোর সহযোগিতায় চলে। সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ৬০০ লোকের ছোট একটি শহর আছে দেশটিতে। শহরটিকে মূলত গ্রামই বলা চলে। দেশটিতে একটি বিমানবন্দর ও একটি সুপার মার্কেট রয়েছে।