হয়রানি ও দুর্নীতি বন্ধ করতে পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিয়ম বাতিলের সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সোমবার (২১ আগস্ট) টিআইবি’র মেঘমালা সম্মেলন কক্ষে ‘পাসপোর্ট সেবায় সুশাসন: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে এ সুপারিশ করা হয়।
টিআইবি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এক গবেষণা চালিয়ে জানতে পেরেছে, পুলিশের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেতে নাগরিকদের ৭৬ দশমিক ২ শতাংশ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। পুলিশকে ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ দিতে হয়েছে ৭০ দশমিক ৩ শতাংশ পাসপোর্ট প্রার্থীকে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জমান বলেন, “গবেষণা প্রতিবেদনে আমরা দেখিয়েছি, পুলিশ ভেরিফিকেশনে হয়রানি হচ্ছে; এটার কোনো দরকারই নেই।”
টিআইবি চেয়ারপার্সন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ২০১৫ সালে পাসপোর্ট দুর্নীতির বিষয়ে টিআইবি আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। ওই প্রতিবেদনের কিছু সুপারিশ পাসপোর্ট অধিদফতর ও সরকার আমলে দুর্নীতি কমেছে।
প্রতিটি বিভাগে জেলা পর্যায়ে মোট ১ হাজার ৪৫৩ জন এ জরিপে অংশ নেন। টিআইবির জরিপে অংশগ্রহণকরীরা বলেছেন, পুলিশের ওই দপ্তর ‘অযথা’ আবেদনপত্রে ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। জঙ্গি কার্যক্রম বা অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা বলে ভয় দেখায়। বাড়িতে না গিয়ে চায়ের দোকান বা থানায় ডেকে পাঠায়। ঘুষ দাবি করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলে।
জরিপে দেখা গেছে, পাসপোর্ট অফিস থেকে দেওয়া স্লিপে উল্লেখ করা নির্ধারিত সময় মত অনেকেই পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। ২৭ শতাংশ বলেছে, তাদের ১২ দিন বেশি সময় লেগেছ। আর সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ দালালের সহযোগিতা নিয়েছ। এই সহযোগিতা নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি সিলেটে। আর সবচেয়ে কম রাজশাহীতে; ২০ শতাংশ।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ২০১৫ সালের তুলনায় পাসপোর্ট সেবার ক্ষেত্রে দুর্নীতি কিছুটা কমেছে। কিছু ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনও হয়েছে।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবির মিলনায়তনে গবেষক শাহনূর রহমান গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।