Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তর কোরিয়ার ইএমপি হামলায় ৯০ শতাংশ মার্কিনি মারা যাবে!

north-koreaউত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে তড়িৎ চুম্বকীয় স্পন্দন (ইএমপি) হামলা চালালে ৯০ শতাংশ মার্কিনি মারা যাবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিশেষজ্ঞরা। উত্তর কোরিয়ার নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত নতুন এই অস্ত্রের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে সাবধান করেছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ের ইএমপি হামলার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। তারা সতর্ক করেছেন, সত্যিই যদি এ ধরনের হামলা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে পড়বে এবং আগামী এক বছরে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মারা যাবে।

chardike-ad

মার্কিন কংগ্রেসের সাবেক তড়িৎ চুম্বকীয় স্পন্দন কমিশনের দুই সদস্য সম্প্রতি প্রতিনিধি পরিষদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক উপকমিটির শুনানিতে বলেছেন, কিম জং-উনের সম্ভাব্য পরমাণু ইএমপি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘সবচেয়ে বড় হুমকি’। কিন্তু সরকার বিষয়টিকে এখনো পর্যন্ত আমলে নেয়নি।

এ বছর উত্তর কোরিয়ার আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগের বিষয় হলেও দেশটির নেতা দাবি করেছেন, সেপ্টেম্বর মাসে তারা ভূগর্ভে হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা করেছে। এ ধরনের বোমা ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করারও প্রযুক্তি আছে তাদের হাতে।

এক সরকারি বিবৃতিতে পিয়ংইয়ং দাবি করেছে, মহাশক্তির ইএমপি হামলার জন্য হাইড্রোজেন বোমা ব্যবহার করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের। এর আগে তারা দাবি করে, তাদের পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত করতে সক্ষম।

কংগ্রেসের সাবেক ইএমপি কমিশনের চেয়ারম্যান উইলিয়াম গ্রাহাম ও প্রধান কর্মকর্তা পিটার ভিনসেন্ট প্রাই শুনানির সময় হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এ ধরনের হামলা যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎব্যবস্থা অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল করে দিতে পারে এবং এর ফলে এক বছরে মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ শতাংশ মানুষ মারা যেতে পারে।

kimকমিশনের এই দুই সদস্য প্রতিনিধি পরিষদকে জাতীয় বিদ্যুৎব্যবস্থা বাঁচানোর তাগিদ দিয়েছেন। তারা আরো বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র যে বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করেছে, তাতে উত্তর মেরুর ওপর দিয়ে আসা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করতে পারবে। কিন্তু দক্ষিণ মেরুর ওপর দিয়ে এলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

ইএমপি কমিশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রাক্তন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা কুর্ট ওয়েলডন গত মাসে দি হিল পত্রিকায় লিখেছেন, ‘পারমাণবিক ইএমপি হামলায় সর্বত্র ইলেক্ট্রনিক জিনিস ধ্বংস হয়ে যাবে, গাড়ি ও ট্রেন ট্রাফিক অচল হয়ে যাবে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিকল হয়ে যাবে এবং যেসব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো আধুনিক সভ্যতা বিনির্মাণ করেছে, সেগুলোও ধ্বংস হবে এবং সম্ভবত জীবনও ধ্বংস হবে। এ ছাড়া ক্ষুধা, রোগবালাই ও সামাজ ভেঙে পড়ায় লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে।’

ইউলিয়ান গ্রাহাম ও ভিনসেন্ট প্রাই বলেছেন, ‘তাদের ধারণা উত্তর কোরিয়ার কাছে ৬০টির মতো পরমাণু অস্ত্র আছে। দেশটির আইসিবিএম ডেনভার ও শিকাগো পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম এবং সম্ভবত পুরো আমেরিকায় আঘাত করার সক্ষমতা আছে।’

এই দুই বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, ‘উত্তর কোরিয়া এমন ধরনের হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মহাশক্তিশালী টু-স্টেজ থার্মোনিউক্লিয়ার বোমার সঙ্গে তুলনীয়।’

এর আগে অন্যান্য বিশেষজ্ঞরাও যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করেছে। এমন একজন বিশেষজ্ঞ হলেন নাসার রকেট বিজ্ঞানী জেমস অবার্গ। তিনি বলেছিলেন, ছোট পরমাণু ওয়ারহেড বহনের জন্য উত্তর কোরিয়া স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপর তার বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের মধ্যে উগ্র বাক্য ছোঁড়াছুড়ির নিন্দা করেছেন উইলিয়াম গ্রাহাম ও ভিনসেন্ট প্রাই। উনকে ‘রকেট ম্যান’ বলেছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে, ট্রাম্পকে ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত’ বলেছেন উন। দুজনেই হামলার হুমকি দিয়েছেন।

মার্কিন কংগ্রেসের ইএমপি কমিশনের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে কমিশনের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে।

তথ্যসূত্র : দি ইন্ডিপেনডেন্ট অনলাইন