কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রবাসীদের চিকিৎসায় যে নতুন ‘হেলথ সার্ভিস ফিস’ নীতি গ্রহণ করেছে তার প্রয়োগ বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে কুয়েত সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটস (কেএইচআরএস)। দৈনিক আল-রাই এর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
কেএইচআরএস এক বিবৃতিতে জানায়, এমন অনেক ঘটনা দেখা গেছে যেখানে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পেরে প্রবাসীরা চিকিৎসা গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছেন। একটা পর্যায়ে তারা আর খরচ বহনে সমর্থ নয়। ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর থেকে কুয়েতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গৃহিত সিদ্ধান্তকে বিবৃতিতে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের কথা তুলে ধরে বলা হয়, এ কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীদের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমে গেছে।
আসলে চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়া মানে স্বাস্থ্যের উন্নতি নয়। বরং খরচ বহনে অক্ষমতা। এই সিদ্ধান্ত প্রবাসীদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি বয়ে আনবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তে বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নিউটনের গতির প্রথম সূত্রকে উদাহরণ হিসেবে টানা হয়েছে- প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
বিশেষ করে একটি ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে যা দুঃখজনক। এক ব্যক্তি হৃদযন্ত্রে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে যান। কিন্তু একই দিন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে একাধিক দিনের জন্যে হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়নি।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত রোধের জন্যে নিরাপত্তা বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কতা বিবেচনা করতে হবে। তাদের যে বেতন তা দিয়ে এই চিকিৎসাভার বয়ে বেড়ানো সম্ভব নয়। এমনকি চিকিৎসা প্রদানের আগেই খরচ নিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনার অভিযোগও উঠেছে।
একজন প্রবাসী ক্লিনিকে গিয়ে কন্সালটেশনের জন্যেই ২ দিনার প্রদান করেন। তাকে অন্য এক হাসপাতালে পাঠানো হয় সার্জারির জন্য। এ কাজে তার বাড়তি প্রয়োজন হবে ১০ দিনার। কিন্তু ওই হাসপাতালে যাওয়ার পর যখন তাকে ১২০ দিনারের এক্স-রে করতে দেওয়া হয়, তখন তিনি সার্জারি চিন্তা বাদ দেন। এমন আরেক রোগী আছেন যিনি সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়েই তাকে ৫০ দিনার জমা দিতে হয়। যে কয়দিন ছিলেন প্রতিদিনের জন্যে দিতে হয়েছে বাড়তি ১০ দিনার করে।
এদিকে, শ্রমিক পর্যায়ের কর্মীদের ঠিকমতো বেতন না দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। যেমন- আল-ফারাজ মসজিদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কর্তৃপক্ষকে বেতন ঠিকঠাকমতো দেওয়ার আবেদন করেছে। আল-শাহেদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের প্রায় ৪ মাস ধরে বেতন দেওয়া হয় না। শ্রমিকরা তাদের এই দুর্দশা মোচনের আকুল আবেদন করেছেন। ওই কম্পানি পরিচ্ছনা কর্মী নিয়োগের জন্যে চুক্তি করেছে মিনিস্ট্রি অব আকাফ অ্যান্ড ইনলামিক অ্যাফেয়ার্স এর সঙ্গে। কিন্তু নিয়মমতো বেতন প্রদান করছে না। সূত্র: আরব টাইমস, সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ