Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে রাষ্ট্রদূত উধাও!

maksudপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা কানাডা মিশন- কোথাও নেই কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত ‘কূটনীতিক’ মোহাম্মদ মকসুদ খান। কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক ওই কাউন্সেলর মন্ত্রণালয় ও মিশনের খাতায় ‘লাপাত্তা’। তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অটোয়াস্থ বাংলাদেশ মিশনের পাসপোর্ট খাতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক চলতি মাসে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলাও দায়ের করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বলছে, অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদকের মামলার ৪ মাস আগেই তাকে জরুরিভিত্তিতে ঢাকায় ফেরার (স্ট্যান্ড রিলিজ) নির্দেশ দেয়া হয়। সরকারি সেই আদেশের প্রেক্ষিতে হাইকমিশনের দায়িত্ব থেকে গত সেপ্টেম্বরেই তাকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি দেয়া হয়।

কিন্তু আজ অবধি মকসুদ খান ঢাকায় রিপোর্ট করেননি। এমনকি তিনি দেশেও ফিরেননি। কানাডা মিশন থেকে প্রাপ্ত সামপ্রতিক রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার বলেন, মিশনের রিপোর্ট মতে মকসুদ খান এখনো কানাডাতে রয়েছেন। তিনি অটোয়াতেই আছেন। কিন্তু যেহেতু তাকে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, তাই তার সঙ্গে মিশনের কোনো যোগাযোগ নেই। মকসুদ খান অবশ্য মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে তার ‘লাপাত্তা’ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

chardike-ad

গতকাল সন্ধ্যায় মোবাইল এবং ইন্টারনেটের একাধিক মাধ্যমে মানবজমিনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। তিনি বলেন, মিশনের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই- এটা সত্য। কারণ গত সেপ্টেম্বরেই আমি মিশন থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। তবে আমি লাপাত্তা নই। শিগগিরই ঢাকায় ফিরছি। অবশ্য এ নিয়ে রিপোর্ট না করার অনুরোধও করেন মকসুদ। তার দাবি এ বিষয়ে তারও অনেক কিছু বলার আছে। তবে এখনই তিনি তা বলতে চান না।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় কানাডা মিশনের কাউন্সেলর (লোকাল) হিসেবে নিয়োগ পান মকসুদ খান। ওই বছরের ৫ই সেপ্টেম্বর অটোয়ায় দায়িত্ব নেন তিনি। কূটনৈতিক অ্যাসাইমেন্টে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির এপিএস ছিলেন (২০০৯ সাল থেকে) বিদ্যুৎ বিভাগের ওই কর্মকর্তা।

কানাডা মিশনের কাউন্সেলর (লোকাল) হিসেবে তার নিয়োগ হলেও তিনি সেখানে কনস্যুলারের দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময়ে পাসপোর্ট খাতের মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগে চলতি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক উপ-পরিচালক মুহম্মদ মাহাবুবুল আলম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহার মতে, মো. মকসুদ খান মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বাবদ সরকারি ৪ লাখ ১২ হাজার ৩৮১ কানাডিয়ান ডলার আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, একই ব্যাংক ড্রাফট একাধিকবার ব্যবহার করে ১ হাজার ৫০০ এবং জনৈক খালিদ হাসানের পাসপোর্ট ফি বাবদ তার ব্যক্তিগত হিসাবে পাঠানো আরো ৩২০ কানাডিয়ান ডলার অন্যায়ভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে আত্মসাৎ করেছেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং তার ওপর অর্পিত আর্থিক দায়িত্বের বিশ্বাস ভঙ্গ করে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ ৫৩ হাজার ৩০৫ টাকা আত্মসাৎ করায় কানাডা মিশনের সাবেক ওই কাউন্সেলরের বিরুদ্ধে দুদক মামলার সিদ্ধান্ত নেয় জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মকসুদ খান কানাডায় পাসপোর্টের দায়িত্বে ছিলেন।

মানবজমিন এর সৌজন্যে