Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

এক লাখ গাড়িচালক যাবে বিদেশে

driveপ্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টের (এসইআইপি) অর্থায়নে এক লাখ দক্ষ গাড়িচালক তৈরি করবে সরকার। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি), বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (বিআরটিসি) এবং সরকারের পরিবহন পুল।

শুধু দেশেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষ গাড়িচালকের অনেক চাহিদা রয়েছে। ইতিমধ্যে রাজধানীতে দুটিসহ সারা দেশে ৬১টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রথম কিস্তির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (probashi.portal.gov.bd)।

chardike-ad

কেন এই প্রশিক্ষণ: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার বলেন, ‘দেশ-বিদেশে গাড়িচালকদের বেশ চাহিদা আছে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টের (এসইআইপি) আওতায় এক লাখ দক্ষ গাড়িচালক তৈরি করে মানবসম্পদে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য। যাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করে তারা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে।’

কাদের জন্য প্রশিক্ষণ: প্রশিক্ষণের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। দেশের যেকোনো জেলার যেকোনো ব্যক্তি চাইলেই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। তবে যেহেতু বৈদেশিক বাজার ধরার জন্য প্রশিক্ষণটি দেওয়া হচ্ছে, তাই প্রশিক্ষণার্থীদের ন্যূনতম মাধ্যমিক পাস হতে হবে। তা না হলে ভাষা শিক্ষা গ্রহণে তাল মেলাতে পারবেন না বলে মনে করছেন আয়োজকরা।

প্রশিক্ষণের মেয়াদ: আগামী পাঁচ বছর কয়েকটি কিস্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রত্যেক পর্বের প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার মাস। তবে চার মাসের আগেও সম্পন্ন হতে পারে প্রশিক্ষণ—এমনটিই জানালেন ডা. নমিতা হালদার। একটি কিস্তির প্রশিক্ষণ শেষ হলে নতুন প্রশিক্ষণার্থী আহ্বান করা হবে। এর জন্য বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে বিজ্ঞপ্তি।

প্রশিক্ষণ দেবেন কারা: ড. নমিতা হালদার জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষক তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়। ১০০ জনকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ২০ জনের দলে বিভক্ত করে চার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষকদের। তাঁরা আগামী পাঁচ বছর এক লাখ মানুষকে গাড়ি চালনা বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেবেন। প্রশিক্ষণের গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়তা করছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।

কী শেখানো হবে: প্রশিক্ষণার্থীদের বেসিক মেইনটেন্যান্সসহ মোটর ড্রাইভিং এবং ভেহিকল ড্রাইভিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এমনভাবে গাড়ি চালনা শেখানো হবে যাতে তাঁরা বিদেশে কর্মসংস্থানের উপযোগী হয়ে ওঠেন। বাংলাদেশের শ্রমবাজারের বেশির ভাগ মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক, তাই গাড়িচালনার সঙ্গে শেখানো হবে আরবি ভাষা। অন্যান্য দেশের কথা মাথায় রেখে শেখানো হবে ইংরেজিও।

বিনা খরচায় প্রশিক্ষণ, দেওয়া হবে সনদ: অর্থ মন্ত্রণায়ের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টের অর্থায়নে দেওয়া হচ্ছে এই প্রশিক্ষণ। তাই লাগবে না কোনো ধরনের খরচ। ড. নমিতা হালদার জানান, প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের নেওয়া হবে পরীক্ষা। উত্তীর্ণ সবাইকে দেওয়া হবে সনদ। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার আগে সর্বপ্রথম শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষানবিশ গাড়িচালকের সনদ দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার কাজটি করবে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।

প্রশিক্ষণ গ্রহণের নিয়ম: বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত আলী জানান, প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদন করতে হবে স্থানীয় প্রশিক্ষণকেন্দ্র বরাবর। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। আবেদন পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করা হবে আবেদনপত্র। পরে প্রার্থীদের ডাকা হবে মৌখিক পরীক্ষার জন্য। তবে কোনো কোনো কেন্দ্রে মৌখিক পরীক্ষার পরিবর্তে লিখিত পরীক্ষাও নিতে পারে। পরীক্ষার বিষয়টি নির্ভর করছে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের ওপর। ভাইভার সময় দেখা হবে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, শারীরিক সক্ষমতা, শেখার আগ্রহ, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা। উত্তীর্ণ সবাইকে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।

প্রশিক্ষণ কখন কোথায়: সারা দেশে ৬১টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে হবে এসব প্রশিক্ষণকেন্দ্রে।

সূত্র- কালের কণ্ঠ