যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অবৈধভাবে নিয়োগকৃত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি অভিযানের সময় অবৈধভাবে বসবাসকারী পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের নেট অঞ্চলের দু’টি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে দেশটির অভিবাসন তদারককারী কর্মকর্তারা। আটককৃত সবাই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেখানে অবস্থান করছিলেন।
নেট অঞ্চলের ফাভারসামের প্রিন্স অব ইন্ডিয়া রেস্টুরেন্ট ও সোয়ানসকোম্বির আকাশ তান্দুরি বালতি নামে দু’টি রেস্টুরেন্টে এই অভিযান চালানো হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রিন্স অব ইন্ডিয়া রেস্টুরেন্ট অভিযান চালিয়ে তিন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ২৭ বছর বয়সী দুই জন স্টুডেন্ট ভিসা ও ৩২ বছর বয়সী একজন ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। তবে তাদের সবারই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আর ৫ ফেব্রুয়ারি আকাশ তান্দুরি হোটেলে অভিযান চালায় অভিবাসন কর্মকর্তারা। সেখানে অনুমতি না থাকার পরও নিয়োগ দেওয়ায় দুই বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। আকটকৃতদের অবৈধ অভিবাসন বিষয়ক একটি কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে রেস্টুরেন্ট দু’টিকে অবৈধ অভিবাসীকর্মী নিয়োগ দেওয়ার দায়ে কর্মীপ্রতি ২০ হাজার পাউন্ড করে জরিমানা করা হয়েছে।তবে প্রিন্স অব ইন্ডিয়ার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালিক দাবি করেন, আটককৃতদের নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনও তাদের কাগজপত্র যথাযথভাবে যাচাই করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা কখনোই অবৈধ কর্মচারীদের নিয়োগ দেই না। কারণ, আমরা জানি অবৈধ শ্রমিকদের নিয়োগ দিলে জরিমানা গুনতে হবে। তাই কোনও নিয়োগকর্তাই একজন অবৈধ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে চান না।’
নিট ও সাসেক্স অভিবাসন তদারককারী দলের প্রধান রিচার্ড লেডারলে বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে খুশি। যুক্তরাজ্যে কারও কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার আগে একটি সাধারণ নিয়োগপূর্ব যাচাই-বাছাইয়ের দরকার হয়। কিন্তু কেউ বিষয়টিকে অবহেলা করলে তাদের জন্য সহজ বার্তা রয়েছে। তা হলো—আমরা তোমাদের খুঁজে বের করে কঠিন আর্থিক জরিমানার মুখোমুখি করবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ শ্রমিক নিয়োগের অনেক ভুক্তভোগী থাকেন। এটা সৎ নিয়োগকর্তাকে ফাঁকি দেওয়া, বৈধ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা ও জনগণের পকেট কাটার মতো অপরাধ। সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত তথ্য থাকলে তা আমাদের জানানোর জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে কাজ করার অনুমতি না থাকা কোনও ব্যক্তিকে চেনার পরও নিয়োগ দেওয়া হলে নিয়োগকর্তাদের জেল-জরিমানা করার বিধান রয়েছে।