Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

খাদ্য-পানি-আশ্রয়ের খোঁজে ফিলিপাইনের লাখ লাখ মানুষ

সিউল, ১৪ নভেম্বর ২০১৩:

ফিলিপাইনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ানের ছোবল থেকে বেঁচে যাওয়া হাজার হাজার দুর্গত মানুষ খাদ্য, পানি আর আশ্রয়ের খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠেছে।ঝড়ের পাঁচদিন পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাকলোবান শহরের বাইরে লোকজন বুধবার চালের একটি গুদামের ওপর চড়াও হলে সেখানকার একটি দেয়াল ধসে আটজন নিহত হয়।

chardike-ad

কর্মকর্তারা বলছেন, আইন শৃঙ্খলার অভাবে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সাহায্য বিতরণে বিঘ্ন ঘটছে। সরকার বলছে, শুক্রবারের এই টাইফুনে দুই হাজার ২০০-এর মতো লোক নিহত হয়েছে।

2013-11-10T024818Z_2136042463_GM1E9BA0TTY01_RTRMADP_3_PHILIPPINES-TYPHOONটাইফুন হাইয়ানের হাত থেকে যারা বেঁচে গেছেন, তারা এখন ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন খাদ্য, পানি আর ওষুধপত্রের জন্য।

সবশেষ হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে টাইফুনে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ২০০-এর আশপাশে নেমে এসেছে, যদিও অন্যান্য সূত্রে বলা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার হতে পারে। অবশ্য এখনো কর্মকর্তারা বলছেন মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা এখনো আছে।

ফিলিপাইন রেডক্রসের এক কর্মকর্তা সোয়াদ মেসুদি বলেন, “শুধু যে অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে তাই নয় – বিমানেও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ সবাই সমুদ্রপথে বা যেকোনো উপায়ে সম্ভব ত্রাণসামগ্রী আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে।”
কিন্তু যারা দুর্গত অবস্থায় বেঁচে আছেন তাদের সংখ্যা বহুগুণ বেশি। জাতিসংঘের হিসেবে এক কোটি দশ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে বাড়িঘর হারিয়েছেন প্রায় ৬ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ।

টাইফুনের আঘাতে শুধু বাড়িঘর নয়, সরকারি অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা – সবই মাটির সাথে মিশে গেছে। ফলে দুর্গত লোকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া এখন এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
এরই মধ্যে বিপন্ন মানুষ ক্রমশই ক্ষুব্ধ আর বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। তারা হামলা চালাচ্ছেন খাদ্য গুদামে, দোকানপাটে।

এমনই এক ঘটনায় হাজার হাজার লোক একটি চালের গুদামে ঢোকার চেষ্টা করলে দেয়াল ভেঙে পড়ে অন্তত আট জন মারা গেছেন। পুলিশ আর সৈন্যরা এসব লুটের চেষ্টা থামাতে পারছে না।

কর্মকর্তারা বলছেন এ জন্য ত্রাণ তৎপরতাও বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। ম্যানিলায় আন্তর্জাতিক রেডক্রসের কর্মকর্তা সোয়াদ মেসুদি বলছেন, ত্রাণসংস্থাগুলো দুর্গত মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
নিরাপত্তাও একটা সমস্যা বলে জানান তিনি। বিভিন্ন জায়গায় সশস্ত্র লোকেরা ঘোরাঘুরি করছে। সেখানে মানুষ ক্ষুধার্ত এবং বেপরোয়া। এটা খুবই স্বাভাবিক খাদ্য আর পানির জন্য এই লোকেরা যেকোনো কিছু করে বসতে পারে বলে বলেন সোয়াদ মেসুদি।

বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, সমন্বিত ত্রাণকাজের কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না।

সরকারের মন্ত্রীরা অবশ্য বলছেন যে ত্রাণ তৎপরতা ঠিকমতই চলছে, খাদ্য ও পানির সরবরাহ দেয়া হচ্ছে – এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদের ভাষায় স্থিতিশীল আছে।

তবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এত ব্যাপক যে বাস্তবে এখনো ত্রাণকাজে একটা সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করা কারো জন্যই সহজ হচ্ছে না। সূত্র: বিবিসি