Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

rita sarkarকারও কারও জীবন যেন জীবন নয়, গিনিপিগ। ব্যবহৃত হয় অন্যের ইচ্ছে মত।  তাদেরই এক জন রীতা সরকার। তাদের কোলাহলপূর্ণ বাড়িটি নীরব ও নিস্তব্ধ। হয়ত বাকি জীবনে তিনি কখনো আর স্বাভাবিক হতে পারবেন না। কারণ যৌতুকের টাকার জন্য তার সঙ্গে যা ঘটেছে তা এতটাই অমানবিক, যা তাকে চিরকালের জন্য স্তব্ধ করে দিয়েছে।

বছর দু’য়েক আগে মুর্শিদাবাদের লালগোলার বিশ্বজিতের সঙ্গে বিয়ে হয় বিন্দু গ্রামের রীতা সরকারের। আর দশটা বাঙালি মেয়ের মতো তারও স্বপ্ন ছিল স্বামীর সঙ্গে সুখের ঘর করার। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দেয়া শুরু করে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

chardike-ad

মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে রিতার বাবা দুই লাখ রুপি তুলে দেয় রীতার স্বামীর হাতে। কিন্তু তাতে মন ভরে না তার। সে আরো টাকার জন্য রীতাকে চাপ দিতে থাকে। নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে তার ওপর। শত নির্যাতনেও টাকা আদায় করতে না পেরে রীতার স্বামী বেছে নেয় এক আদিম পন্থা। অস্ত্রোপচারের ছুতোয় বিক্রি করে দেয় রীতার একটি কিডনি।

হিন্দুস্থান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে রীতা জানান, দুই বছর আগে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন রীতা। চিকিৎসার জন্য তাকে কলকাতা নিয়ে আসা হয়। ডাক্তার তাকে বলেন যে তার অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচার করা দরকার। সরল মনে তাতে স্বায় দেয় রীতা। কিন্তু তিনি ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি এই অস্ত্রোপচারের নামেই তার একটি কিডনি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে তারা মুর্শিদাবাদ ফিরে আসেন। কিছুদিন পর তিনি পেটে  ব্যথা অনুভব করেন। তবে এবার তার স্বামী তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তাকে মারধোর করে ঘরে বন্দি করে রাখা হয়।

বেশ কিছুদিন পর রীতা তার এক আত্মীয়ের সহায়তায় ডাক্তারের কাছে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফী করান। এবার আসল সত্য প্রকাশিত হয়ে পড়ে। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়েন রীতা। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রীতার বাবা বিশ্বজিৎ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তার করা হয় বিশ্বজিৎকে। বর্তমানে বিশ্বজিৎ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রস্তুতি চলছে। আর হতভাগী রীতাকে একটি নার্সিং হোমে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে যেন একটি কিডনি নিয়ে তিনি বাকি জীবন স্বাভাবিকভাবে কাটাতে পারেন।