Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

babulহবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে কিশোরী বিউটি আক্তারকে এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করেছিল নারী ইউপি সদস্যের ছেলে বাবুল মিয়া। এ ঘটনায় মামলা করায় বিউটিকে ফের তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে বাবুল।

সবুজ জমিনে লাল পোশাক পরা কিশোরী বিউটির লাশের করুণ ছবি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে নাড়া পড়ে। বাবুল মিয়ার বিচার দাবিতে সোচ্চার হন অনেকে। দাবি ওঠে তাকে গ্রেফতারের। অবশেষে শনিবার র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছে সে।

chardike-ad

জানা গেছে, অভিযুক্ত বাবুল মিয়ার কাছে নারীরা ছিল খেলনার মতো। ব্ল্যাকমেইল করে যৌন হয়রানি থেকে ধর্ষণ করত সে। বাবুলের আচরণে এলাকার সবাই অতিষ্ঠ হলেও এই দুর্বৃত্তকে থামাতে এগিয়ে আসেনি কেউ। ফলে দিনে দিনে যৌন নিপীড়ক ধর্ষক থেকে পৈশাচিক খুনিতে পরিণত হয় সে।

আর তার নিষ্ঠুরতার শিকার হয় ১৬ বছরের অসহায় কিশোরী বিউটি আক্তার। ধর্ষণের বিচার চাইতে মামলা করে ফের ধর্ষণের পর খুন হয়ে যায় সে। জানা গেছে, ২১ জানুয়ারি ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এক মাস নির্যাতনের পর বিউটিকে কৌশলে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল।

এ ঘটনায় গত ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা কলম চানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন। পরে মেয়েকে সায়েদ আলী তার নানাবাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। মামলার ঘটনায় বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ মার্চ বিউটি আক্তারকে উপজেলার গুণীপুর গ্রামের তার নানাবাড়ি থেকে রাতে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। ফের ধর্ষণের পর তাকে খুন করে লাশ হাওরে ফেলে দেয়।

বাবুলের বিরুদ্ধে শুধু বিউটির ওপর নির্যাতন ও হত্যা নয়, এর আগে থেকে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। রাস্তাঘাটে নারীদের উত্ত্যক্ত করা, সখ্য গড়ে প্রতারণা ও অনৈতিক কাজের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের মৃত মলাই মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩০)। তিনি দুই সন্তানের জনক।

২০১০ সালে তার গ্রামের তৌহিদ মিয়ার মেয়ে, সিলেটের এক প্রবাসীর স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পরও সে একাধিক নারীর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক স্থাপন করে। তাদের ব্ল্যাকমেইল করে অত্যাচার চালায়। রাস্তাঘাটে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত ও হয়রানি করা তার নেশা।

বিউটির বাবা সায়েদ আলী বলেন, বখাটে বাবুলের কারণে শুধু আমার মেয়েই নয়, এলাকার অনেক মেয়েই লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, বাবুল এলাকার উঠতি বয়সের তরুণী ও কিশোরীদের রাস্তাঘাটে পেলেই বাজে ভাষায় উত্ত্যক্ত করত। কখনও কখনও গায়ে হাতও দিত। তবে এলাকায় সে প্রভাবশালী হওয়ার কারণে নিরীহ লোকজন কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।

ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, নারীরা হচ্ছে তার কাছে খেলনার মতো। সে প্রায়ই বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণীদের নিয়ে এসে আড্ডার নামে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাত। তার আচরণে এলাকার সবাই অতিষ্ঠ।