স্ত্রী শামীমা আক্তারকে তালাক দিয়েছেন তরুণদের জনপ্রিয় অভিনেতা ও ‘ঘাসফুল’ ছবির নায়ক আসিফ। এরই মধ্যে এই তালাকের নোটিশের কাগজ তিনি হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন শামীমা আক্তার। এখানে তালাকের কারণ হিসেবে স্ত্রীর অসৎ চরিত্র, বনিবনা হচ্ছে না এবং আরও কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন আসিফ।
শামীমা আক্তার আরও জানান, নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে আসিফ গত ২ এপ্রিল স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আর তা পোস্ট করা হয়েছে ২৩ এপ্রিল। ওই দিন রাত ১২টা নাগাদ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে আসিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। মালয়েশিয়া থেকে নাটকের শুটিং শেষে দেশে ফিরছিলেন তিনি। পরদিন সকালে আদালত দুই পক্ষের শুনানি শেষে আসিফকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ২৫ এপ্রিল স্ত্রীকে আর নির্যাতন করবেন না এবং সন্তানের ভরণপোষণ করবেন—এই শর্তে তাঁকে জামিন দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক শফিউল আজম। তিনি আরও আদেশ দিয়েছেন, যদি আসিফ আগের মতো স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে অন্যায় করেন, তবে আবারও তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার শামীমা আক্তার বলেন, ‘আপসের শর্তে আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন। আদালত তখন তাঁকে তালাকের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলেন। কিন্তু সে তখন এ ব্যাপারে কিছুই বলেনি। আমি মনে করি, আসিফ আদালতের কাছে মিথ্যা বলেছে। এ ছাড়া জামিন পাওয়ার পর আসিফ বা আসিফের পক্ষ থেকে কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি নিজে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।’
পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের একমাত্র মেয়ে আজওয়া রহমান অসুস্থ। আজ সকালে ওকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছি। আমার কাছে মেয়ে আগে। আর আসিফ বললেই তো সব শেষ হয়ে যাবে না। আমাদের মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভরণপোষণ আর খোরপোষের ব্যাপার আছে। আগামী ৬ মে পর্যন্ত আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন। দেখি সেদিন আসিফ কী বলে? তারপর আমি পদক্ষেপ নেব।’
এ ব্যাপারে জানার জন্য আসিফের ফোন নম্বরে কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সম্প্রতি মডেল ও অভিনয়শিল্পী কাজী আসিফ রহমানের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী শামীমা আক্তার নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন। শামীমা আক্তার তখন বলেন, ‘আমি কানাডাপ্রবাসী। ১৭ বছর যাবৎ কানাডার টরন্টোতে আছি। ২০১৪ সালে ফেসবুকে আসিফের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। এরপর যখন আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই, তখন পরিবারকে জানাই। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছে। ২০১৫ সালে ৭ আগস্ট আমাদের বিয়ে হয়।’
বিয়ের পর কানাডায় ফিরে যান শামীমা আক্তার। তিনি দাবি করেন, বিয়ের পর বিভিন্ন সময় আসিফ তাঁর কাছে টাকা দাবি করেন। মাঝেমধ্যেই স্বামীর দাবি পূরণ করেছেন তিনি। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ওই সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। তখন টাকা দাবি করে আসিফ তাঁকে মারধর করেছেন। পরের বছর ৯ জানুয়ারি তিনি আবার কানাডায় ফিরে যান। সেখানে আট মাস আগে তাঁদের প্রথম সন্তান আজওয়া রহমানের জন্ম হয়। এবার গত ৩ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে দেশে এসেছেন শামীমা আক্তার। তখন বড় অঙ্কের টাকা চাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তিক্ততা বাড়তে থাকে। দুই পরিবারের মুরব্বিদের ব্যাপারটি জানানো হয়। এ সময় স্ত্রীকে আবারও মারধর করেন আসিফ। একপর্যায়ে বাসা ছেড়ে চলে যান। শেষে গত ৬ মার্চ স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন শামীমা আক্তার। তিনি আসিফের বিরুদ্ধে অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখারও অভিযোগ করেন।