দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বনিন্ম মজুরী নিয়ে বিতর্ক

দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বনিন্ম মজুরী নিয়ে শুরু হয়ে বিতর্ক। গত শুক্রবার ব্যবসায়ী এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো নিয়ে গঠিত মিনিয়াম ওয়েজ কমিশনের বৈঠক শুরু হলেও ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। ১৯ ঘন্টা বৈঠক শেষে গতকাল শনিবার সকাল ভোটাভুটির মাধ্যমে ১০.৯ শতাংশ মজুরী বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি বেশিরভাগ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারা। ২৭ সদস্যের মধ্যে ১৪ জন ভোটে অংশ নেন। ৮-৬ ভোটে ১০.৯ শতাংশ মজুরী বৃদ্ধি পেয়ে ৮,৩৫০ উওন ন্যুনতম মজুরী বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শুরু করেছে। কনভেনিয়েন্স স্টোরগুলোর মালিক সংগঠন ‘আমাকে গ্রেফতার করো’ শ্লোগানে ন্যুনতম মজুরী বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলোও তাদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। তাদের দাবি ছিল ন্যুনতম মজুরী ১৫.৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা।

মজুরী কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছে আমরা কোম্পানি ও শ্রমিক উভয় পক্ষকে খুশি করতে পারব না। সবকিছু বিবেচনা করে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে আমরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।

কোরিয়া ফেডারেশন অব মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ শুরু থেকেই মজুরী বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে আসছে। সংগঠনটি বলছে অর্থনৈতিক শ্লথগতির কারণে এমনিতেই কোম্পানীগুলো খারাপ সময় পার করছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন মজুরি বৃদ্ধির বাস্তবায়ন করা তাদের পক্ষে কঠিন হবে। মিনিয়াম ওয়েজ কমিশনের এ সিদ্ধান্ত আমরা মানতে পারছি না। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ঠিক করবো।

প্রেসিডেন্ট হাউস ছংওয়াদে  মজুরী কমিশনের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমিকবান্ধব প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত মুন জে ইন নির্বাচনের সময় ২০২০ সালের মধ্যে ঘণ্টাপ্রতি আয় ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ১০ হাজার উওন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। খরচ ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির অংশ হিসেবে তিনি এই উদ্যোগের কথা বলেছিলেন।

অন্যদিকে বিরোধী দল মজুরী বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আবার পর্যালোচনা করার দাবি জানিয়েছে। প্রধান বিরোধীদল লিবার্ট পার্টি’র প্রধান মুখপাত্র ইয়ুন ইয়ং সক জানিয়েছেন মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ২৯.১ শতাংশ মজুরী বৃদ্ধি প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্যই করা হয়েছে। অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের জন্য এই সিদ্ধান্ত আবার ভেবে দেখার জন্য মজুরী কমিশনের প্রতি তিনি আহবান জানান।

কোরিয়ার পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে প্রতি মাসে গড়ে এক লাখ ৪২ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালের আর্থিক মন্দার পর থেকে দেশটির প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি চলছে।