Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে পণ্য বাণিজ্যে শীর্ষ দেশ চীন

সিউল, ১২ জানুয়ারী ২০১৪:

কয়েক যুগ ধরে পণ্য বাণিজ্যে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানটি এবার চীনের দখলে যাচ্ছে। ২০১৩ সালের প্রথম ১১ মাসের হিসাবে দেখা যায়, পণ্য বাণিজ্যে শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। খবর বিবিসির।

chardike-ad

চীনের সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৩ সালে তাদের পণ্য বাণিজ্য বেড়েছে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। বছর শেষে তাদের মোট আমদানি-রফতানি ৪ দশমিক ১৬ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডিসেম্বরের প্রতিবেদনটি এখনো প্রকাশ হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে পুরো বছরের বাণিজ্য পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নভেম্বর পর্যন্ত তাদের মোট পণ্য বাণিজ্য ছিল ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। কয়েক যুগ ধরেই পণ্য বাণিজ্যে শীর্ষ দেশের তকমাটি তাদের দখলে। তবে এবারে চীনের পণ্য বাণিজ্যের তথ্যানুযায়ী এ স্থান এখন তাদের দখলেই যাচ্ছে।

china_28687পণ্য রফতানিতে চীন শীর্ষ দেশ হিসেবে উঠে আসে ২০০৯ সালেই। শিল্পোত্পাদন, অবকাঠামো নির্মাণ ও অভ্যন্তরীণ ভোগে প্রবৃদ্ধির সুবাদে তাদের আমদানিও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। চীনের শুল্ক বিভাগের মুখপাত্র জেং ইউশেং বলেন, সম্ভবত গত বছরই পণ্য বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলেছে চীন। চীনের রফতানি উপাত্তের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অন্তর্গামী পুঁজিপ্রবাহে সরকারি নিয়ন্ত্রণ এড়াতে দেশটির রফতানিকারকদের অনেকেই রফতানির পরিমাণটি বাড়িয়ে দেখাচ্ছেন সাম্প্রতিক মাসগুলোয়।

চীনা নীতিনির্ধারকরা এ সমস্যা সম্পর্কে সচেতন। এ ধরনের প্রতারণা রোধে নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। গত মে মাসে চীনের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নিয়ন্ত্রক স্টেট অ্যাডমিনস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জ (এসএএফই) ঘোষণা দেয়, তারা রফতানি চালানগুলো আরো গভীরভাবে খতিয়ে দেখবে। মিথ্যে ঘোষণা দেয়া কোম্পানিগুলোকে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।

বিভিন্ন সংস্থার এমন একাধিক পদক্ষেপে আগামী দিনগুলোয় এ সমস্যা কমে আসবে বলে আশা করছেন নিয়ন্ত্রকরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষকদেরও এমনই মত। বেইজিংয়ে এইচএসবিসির চীনা অর্থনীতি বিশ্লেষক সান জুনেই বলেন, আমদানি-রফতানির মিথ্যা উপাত্ত উপস্থাপনের প্রবণতা অনেক কমে আসবে এসব পদক্ষেপে। প্রকৃত চিত্র প্রতিফলনের বিবেচনায় চলতি বছরের পরিসংখ্যানগুলো তুলনামূলক বেশি গ্রহণযোগ্য হবে আশা করা যায়।

বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, চীনা উপাত্তের ভুয়া অংশটুকু বাদ দিলেও ২০১৩ সালেই যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে চীন। আইএইচএসের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনীতি বিশ্লেষক রাজিব বিশ্বাস বলছেন, প্রকৃত উপাত্তের বিবেচনায়ও চীন সম্ভবত ২৫০ বিলিয়ন ডলারে এগিয়ে থাকবে। আগামীতে এ ব্যবধান আরো বাড়বে। সরকারি হিসাবে ২০১৩ সালে চীনের রফতানি বেড়েছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, আমদানি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

দুই দশক ধরেই রফতানি বাড়ছে চীনের। শিল্পোত্পাদন ও রফতানির ওপর নির্ভর করে বর্তমানে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে জায়গা করে নেয়া চীন ২০৩০ সালের মধ্যেই জিডিপিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উচ্চ প্রবৃদ্ধির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেশটিতে আয়বৈষম্য ও অনুত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগ ও ব্যয় বাড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত ঋণপ্রবাহের মাধ্যমে উত্পাদন ও রফতানি বাড়ানোর কারণে আর্থিক খাতের ঝুঁকিও অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। ২০০৮-০৯ সালের আর্থিক বিপর্যয়ের পর সৃষ্ট বিশ্বমন্দায় রফতানি বাজারগুলোয় চাহিদা কমে আসায় এ সমস্যা আরো বাড়ে। সূত্রঃ বণিকবার্তা।